|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর ক্রিস সিলভারউড বিদায় নিলে শ্রীলঙ্কার অন্তর্বর্তীকালীন কোচ হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয় সনাথ জয়সুরিয়াকে। কিছুদিনের মধ্যে তাকে এক বছরের জন্য শ্রীলঙ্কার হেড কোচের নিয়োগ দেয়া হয়। কিন্তু ক্রমাগত সফল হওয়ায় জয়সুরিয়াকে এবার ২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত শ্রীলঙ্কার হেড কোচের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।
লম্বা সময়ের জন্য গুরুদায়িত্ব পেয়ে নিজের মূলমন্ত্র জানিয়েছেন লঙ্কান এই কিংবদন্তি ক্রিকেটার। গত জুলাই ও আগস্টে ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলেছে শ্রীলঙ্কা। ঘরের মাঠে তিন ম্যাচের ওয়ানডে ও সমান টি-টোয়েন্টি ম্যাচের পর আগস্ট-সেপ্টেম্বরে ইংল্যান্ড সফরে গিয়ে তিনটি টেস্ট খেলে লঙ্কানরা।
এসব সিরিজে অন্তর্বর্তীকালীন কোচের দায়িত্ব পালন করেন জয়সুরিয়া। গত ২৭ বছরে ভারতকে প্রথমবার ওয়ানডে সিরিজ হারানোর পর তার অধীনে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় টেস্ট জিতে রীতিমতো ইতিহাস তৈরি করে শ্রীলঙ্কা।
এরপর ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডকে টেস্ট সিরিজে ২-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশও করে দলটি। ফলে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ওঠার ক্ষীণ একটি সম্ভাবনাও জাগিয়ে তুলেছে দলটি। সবকিছু বিবেচনা করেই জয়সুরিয়ার গুরুদায়িত্ব বাড়ানো হয়েছে।
নিজের মূলমন্ত্র জানাতে গিয়ে জয়সুরিয়া বলেন, 'আমি সবসময় বলে আসছি, পুরো ব্যাপারটাই হলো আত্মবিশ্বাস ও আস্থা। দলকে ঘিরে এই আবহ আমি তৈরি করতে পেরেছি এবং এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিছুটা ভাগ্যের ব্যাপারও ছিল। অনেক অনেক কাজ করার পরও কখনও কখনও ভাগ্যের ছোঁয়াও সামান্য লাগে।'
'ক্রিকেটারদের কথাও বলতে হবে, ভালো করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিল ওরা। ওরা জানে যে, গত বছর দুয়েক কত কিছুর মধ্য দিয়ে তাদের যেতে হয়েছে। সত্যিই হতাশ ছিল ওরা। শ্রীলঙ্কার মানুষদের আমি অনুরোধ করেছি ক্রিকেটারদের পাশে থাকতে। ওরা খুব ভালো ক্রিকেটার ও দারুণ প্রতিভাবান। আমি ওদেরকে স্রেফ বিশ্বাস জুগিয়েছি এবং পাশে থেকেছি। আমার সঙ্গে ওরা যে কোনো কথা বলতে পারে, যা কিছু ইচ্ছা আলোচনা করতে পারে।'
গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও শ্রীলঙ্কা দলের পরামর্শক হিসেবে ছিলেন জয়সুরিয়া। এর আগে শ্রীলঙ্কার হাই পারফরম্যান্স দলের সঙ্গে কাজ করেছেন সাবেক এই ক্রিকেটার। আপাতত পুর্ণাঙ্গ কোচ হিসেবে তার প্রথম মিশন ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ।
এর আগে দুবার নির্বাচক হিসেবেও শ্রীলঙ্কা দলের সঙ্গে কাজ করেছেন জয়সুরিয়া। তবে তাকে নিয়ে বিতর্ক ছিল। প্রধান নির্বাচক হিসেবে ক্রিকেটারদের সঙ্গে বেশি মিশে যেতেন তিনি, এটা ছিল কয়েকটি অভিযোগের মধ্যে একটি। কিন্তু কোচ হিসেবে সেটিই এখন তার মূল শক্তি। ক্রিকেটারদের তিনি স্বাধীনতা দিতে চান পুরোদমে।
জয়সুরিয়া আরও বলেন, 'অনুশীলনে আমরা বিভিন্ন রকম কিছু করার চেষ্টা করি। ব্যাপারটাকে উপভোগ করে তুলতে চাই আমরা। অনুশীলন শুরুর আগেও কিছু ছোট পরিবর্তন আমরা এনেছি, যা দলীয় আবহকে দারুণ করে তুলেছে। এরকম ছোট ছোট কিছু কাজ করেছি, যা বড় ব্যবধান গড়ে দিয়েছে।'
'মৌলিক ব্যাপারগুলো গুরুত্বপূর্ণ। এসব তারা উপভোগ করে এবং এসবে মনোযোগ দেয়। তবে সবসময়ই বলে আসছি, ‘খেলায় ও অনুশীলনে সর্বোচ্চ মনোযোগ দাও। শেষ হলে পুরোপুরি এটার বাইরে চলে যাও।’ যখন ওরা খেলছে না বা অনুশীলন করছে না, ম্যাচ যখন শেষ, তখন ওদেরকে চাপে রাখার কোনো প্রয়োজন নেই আমার।'