|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
সেঞ্চুরি করে ডাম্বুলা সিক্সার্সকে লড়াইয়ের পুঁজি ঠিকই এনে দিয়েছিলেন কুশল পেরেরা। তবে ডাম্বুলার উইকেটকিপার ব্যাটারের সেঞ্চুরি ম্লান হয়ে গেছে আভিস্কা ফার্নান্দো ও চারিথ আসালাঙ্কার জুটি। তাদের দুজনের ব্যাটেই ৪ উইকেটের জয় পেয়েছে জাফনা কিংস। ডাম্বুলার হারের দিনে ৪ ওভারে ৩০ রান খরচায় ২ উইকেট নিয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান। আরেক বাংলাদেশি তাওহীদ হৃদয় ব্যাটিংয়ের সুযোগই পাননি।
১৯২ রান তাড়ায় কুশল মেন্ডিস ও পাথুম নিশানকার ব্যাটে ভালো শুরুই পেয়েছিল জাফনা। প্রথম ৩ ওভারে তারা দুজনে যোগ করেন ২৪ রান। উইকেটের খোঁজে চতুর্থ ওভারেই মুস্তাফিজের হাতে বল তুলে দেন মোহাম্মদ নবি। অধিনায়কের আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন নিজের প্রথম ওভারেই। বাঁহাতি এই পেসারের ট্রেডমার্ক অফ কাটারে ড্রাইভ করতে গিয়ে এজ হয়ে শর্ট থার্ডে থাকা নুয়ান্দো ফার্নান্দোকে ক্যাচ দিয়েছেন। মুস্তাফিজ সেই ওভারে দিয়েছেন মাত্র ৬ রান।
পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার আগে ফিরেছেন নিশানকাও। নুয়ান থুসারার বলে ২৭ রানে। পরের ওভারে রাইলি রুশোকে নিজের শিকার বানিয়েছেন নবি। এরপর অবশ্য দারুণ এক জুটি গড়ে তোলেন আভিস্কা ও আসালাঙ্কা। তারা দুজনে মিলে জাফনাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন। এদিন শুরু থেকেই আক্রমণাত্বক ছিলেন আভিস্কা। প্রতিপক্ষের বোলারদের উপর রীতিমতো তাণ্ডব চালিয়েছেন। তাদের দুজনের জুটি ভাঙতে আবারও ১১তম ওভারে বোলিংয়ে আনা হয় মুস্তাফিজকে।
প্রথম ৩ বলে এক রান দেয়া বাঁহাতি এই পেসার পরের তিন বলে দুই চারে দিয়েছেন ৯ রান। সব মিলিয়ে সেই ওভারে ১০ রান খরচায় উইকেটের দেখা পাননি মুস্তাফিজ। এদিকে ব্যাট হাতে তাণ্ডব চালানো আভিস্কা ২১ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেছেন। পঞ্চাশ ছোঁয়ার পরই আকিলা, নিমেশ ভিমুক্তি ও থুসারার উপর ঝড় তুলেছেন। ৪ ওভারে আসালাঙ্কা ও আভিস্কা তুলেছেন ৭৯ রান। উইকেটের আশায় ১৭তম ওভারে আবারও বোলিংয়ে আনা মুস্তাফিজকে।
বোলিংয়ে এসেই হাফ সেঞ্চুরি করা আসালাঙ্কাকে নিজের শিকার বানিয়েছেন বাঁহাতি এই পেসার। মুস্তাফিজের অফ স্টাম্পের বাইরের স্লোয়ার ফুলটসে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ দিয়েছেন ৫০ রান করা আসালাঙ্কা। পরের চার বলে তার স্লোয়ারে বোকা বনে গেছেন ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা, নিতে পেরেছেন মাত্র ২ রান। সব মিলিয়ে সেই ওভারে ফিজ দিয়ে গেছেন ৩ রান। পরের ওভারে ৩৪ বলে ৮০ রান করা আভিস্কাকে ফিরিয়েছেন থুসারা।
নিজের শেষ ওভারে অবশ্য দুই চারে ১১ রান দিয়ে মুস্তাফিজ। যদিও একই ওভারে রান আউটে ফিরেছেন ধনাঞ্জয়া। ফিজ ১১ রান দেয়ায় পরের ওভারে জাফনার জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৪ রান। শেষ পর্যন্ত ৪ বলে ১ রানের সমীকরণে নেমে এলেও ফ্যাবিয়েন অ্যালেন বারবার মিস করায় ১ বলে ১ রানে নামিয়ে আনেন ভিমুক্তি। যদিও শেষ বলে অ্যালেনের বিপক্ষে ছক্কা হজম করতে হয়েছে তাকে। তাতেই ৪ উইকেটের জয় পেয়েছে জাফনা।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের চতুর্থ ওভারেই উইকেট হারায় ডাম্বুলা। আগের ম্যাচে ব্যাট হাতে ব্যর্থ হওয়া দানুশকা গুনাথিলাকা জাফনার বিপক্ষেও রানের দেখা পাননি। ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার ভেতরে ঢোকা লেংথ ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরার আগে করেছেন মাত্র ৯ রান। এরপর অবশ্য পাওয়ার প্লেতে আর কোন উইকেট হারায় ডাম্বুলা। প্রথম ৬ ওভার শেষে এক উইকেট হারানা ডাম্বুলা তুলেছে ৪২ রান। তিনে নেমে পেরেরাকে দারুণভাবে সঙ্গ দিতে থাকেন নুয়ান্দো ফার্নান্দো।
ক্যান্ডি ফ্যালকন্সের বিপক্ষে ব্যাট হাতে সুবিধা করতে পারেননি পেরেরা। তবে জাফনার সঙ্গে জ্বলে উঠেছেন বাঁহাতি এই ওপেনার। বিজয়াকান্ত বিশ্বকান্তের বল ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ঠেলে দিয়ে এক রান নিয়ে ৩১ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেছেন। পঞ্চাশ ছোঁয়ার পরই দ্রুত রান তোলায় মনোযোগ দেন পেরেরা। এদিকে হাফ সেঞ্চুরির আগে ফিরেছেন ফার্নান্দো। ধনাঞ্জয়ার অফ স্টাম্পের বাইরের ফুল ডেলিভারিতে ফেরার আগে খেলেছেন ৪০ রানের ইনিংস।
শুরু থেকেই আক্রমণাত্বক ব্যাটিং করতে থাকেন চারে নামা মার্ক চ্যাপম্যান। যদিও ব্যক্তিগত ২০ রানের সময় জীবন পেয়েছেন নিউজিল্যান্ডের এই ব্যাটার। জেসন বেহেরনডর্ফের আগের ছক্কা মারা পেরেরা পরের বলে এক রান নিয়ে ৫০ বলে সেঞ্চুরি পূরণ করেছেন। যা এলপিএলের এবারের আসরের প্রথম সেঞ্চুরি। পেরেরার অপরাজিত ১০২ এবং চ্যাপম্যানের ৩৩ রানের সুবাদে ২ উইকেট হারিয়ে ১৯১ রানের পুঁজি পায় ডাম্বুলা।