টি- টোয়েন্টি বিশ্বকাপ

বাংলাদেশকে হারিয়ে সেমি ফাইনালে এক পা ভারতের

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
প্রকাশের তারিখ: 18:30 শনিবার, 22 জুন, 2024

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||

সংক্ষিপ্ত স্কোর-

ভারত- ১৯৬/৫ (২০ ওভার) (রোহিত ২৩, কোহলি ৩৭, পান্ত ৩৬, দুবে ৩৪, হার্দিক ৫০*; রিশাদ ২/৪৩, তানজিম ২/৩২)

বাংলাদেশ- ১৪৬/৮ (২০ ওভার) (তানজিদ ২৯, শান্ত ৪০, রিশাদ ২৪; কুলদীপ ৩/১৯, বুমরাহ ২/১৩)

আগের ম্যাচেই আফগানিস্তানকে উড়িয়ে দিয়ে সুপার এইট শুরু করেছিল ভারত। দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশকে ৫০ রানে হারিয়ে বিশ্বকাপের সেমি ফাইনালের দৌড়ে এক পা এগিয়ে গেছে ভারত। এই ম্যাচে আগে ব্যাট করে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৯৬ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করায় ভারত। বাংলাদেশ ১৪৫ রানের বেশি করতে পারেনি।

ব্যাটিং বান্ধব উইকেটে টসে জিতে ভারতকে আগে ব্যাটিংয়ের পাঠানোর পরই বড় প্রশ্ন উঠেছিল বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর সিদ্ধান্ত নিয়ে। এরপর বল হাতে শুরুতে উইকেট তুলে নিলেও ভারতের ব্যাটাররা ঠিকই বাংলাদেশের বিপক্ষে বড় সংগ্রহ গড়েছেন। ব্যাট হাতে বাংলাদেশ লড়াই উপহার দিতে পারেনি।

বড় লক্ষ্যের জবাবে বাংলাদেশ বেশ ভালো শুরু পেয়েছিল। বিশেষ করে তানজিদ হাসান তামিম শুরু করেই ভারতীয় বোলারদের ওপর চড়াও হয়েছিলেন। যদিও লিটন খেলছিলেন ধীরে। হার্দিক পান্ডিয়াকে ডিপ অঞ্চল দিয়ে ছক্কা মেরে ভালো কিছুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন লিটনও। তবে পরের বলে আবার চড়াও হতে গিয়ে ডিপ স্কয়ার লেগে সূর্যকুমারের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন এই ব্যাটার। লিটনের ব্যাট থেকে আসে ১০ বলে ১৩ রানের ইনিংস।

তামিম আউট হয়েছেন কুলদীপ যাদবের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে। যদিও খালি চোখে মনে হচ্ছিল বলটি লেগ স্টাম্প থেকে বেরিয়ে যাবে। তবে বাংলাদেশ রিভিউ নিলে দেখা যায় কুলদীপের গুগলি বল একটু ব্যাকফুটে গিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন তানজিদ। তবে বল আঘাত করে পেছনের পায়ে। থার্ড আম্পায়ার বল দেখে আউট ঘোষণা করেন তানজিদকে। ফলে ৬৬ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ। তানজিদের ব্যাট থেকে আসে ৩১ বলে ২৯ রান। পরের ওভারে এসে প্রথম বলেই তাওহীদ হৃদয়কে এলবিডব্লিউ করেন কুলদীপ। ৪ রান করে ফেরেন এই বাংলাদেশি ব্যাটার।

কুলদীপ নিজের শেষ ওভার করতে এসে সাকিব আল হাসানকে ফিরিয়েছেন। দ্বিতীয় বলেই দারুণ ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন তিনি। পরের বলে আবার তুলে মারতে গিয়ে কাভারে রোহিতকে ক্যাচ দেন তিনি। এরপর জসপ্রীত বুমরাহ আউট করেছেন একপ্রান্ত আগলে রাখা শান্তকে। বুমরাহর লেন্থ বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ডিপ থার্ড ম্যান অঞ্চলে দারুণ ক্যাচ নিয়েছেন আর্শদীপ সিং। এক ম্যাচ পর একাদশে ফিরে ব্যাট হাতে ব্যর্থ হয়েছেন জাকের আলী। তিনি ৪ বলে মাত্র ১ রান করে আর্শদীপের স্লোয়ার বলে ডিপ মিড উইকেটে দারুণ ক্যাচ নিয়েছেন কোহলি।

শেষদিকে এসে দারুণ ক্যামিও খেলেছেন রিশাদ হোসেন। তিনি ৯ বলেই ২৪ রান তুলে নিয়েছিলেন। এই পেসারের ওপর চড়াও হতে গিয়ে এক্সট্রা কাভারে রোহিত শর্মাকে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়েছেন তিনি। ইনিংসের শেষ ওভারে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে ফিরিয়েছেন আর্শদীপ। শেষ পর্যন্ত শেখ মেহেদী ও তানজিম সাকিব অপরাজিত থাকলেও বাংলাদেশ দেড়শ পেরুতে পারেনি।

এর আগে বল হাতে নেমে উইকেটের দেখা পেতে চতুর্থ ওভার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে বাংলাদেশকে। নিজের দ্বিতীয় ওভারে এসে ভারতীয় ওপেনার রোহিত শর্মাকে ঝুলিয়ে দেয়া বলে আউট করেছেন তিনি। রোহিত একটু জায়গা করে খেলতে চেয়েছিলেন। তবে ব্যাটার কানায় লেগে বল টপ এজ হয়ে চলে যায় শর্ট কাভারে জাকের আলীর হাতে। কাভার থেকে দৌড়ে এসে তিনি ডাইভ দিয়ে ক্যাচ লুফে নিয়েছেন। আউট হওয়ার আগে টানা দুই বলে সাকিবকে ছক্কা ও একটি চার হাঁকান।

রোহিত ফিরেছেন ১১ বলে ২৩ রানের ইনিংস খেলে। এরপর ঋষভ পান্তকে নিয়ে বাংলাদেশের বোলারদের ওপর চড়াও হন কোহলি। এই দুজনের ব্যাটে পাওয়ার প্লের ৬ ওভারেই ৫৩ রান তুলে ফেলে ভারত। পাওয়ার প্লের পরেই বিরাট কোহলিকে বোল্ড করে আউট করেছেন তানজিম হাসান সাকিব। ২৮ বলে ৩৮ রান করে ফিরে গেছেন ভারতের এই ব্যাটার। ১ বল পরে সূর্যকুমার যাদবকেও আউট সাইড এজ করে আউট করেন এই পেসার। ২ বলে ৬ রান করা এই ব্যাটার পুল করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে লিটন দাসকে ক্যাচ দেন।

রোহিত-কোহলি ও সূর্যকুমার ফিরে গেলেও একপ্রান্ত আগলে রেখে ঝড় তুলেছিলেন পান্ত। শেষ ৮ বলেই এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার তুলে নিয়েছিলেন ২৪ রান। রিশাদের ওপরও চড়াও হয়েছিলেন তিনি একটি ছক্কার পর মেরেছিলেন একটি চার। পরের বলেই রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে শর্ট থার্ডম্যান অঞ্চলে তানজিমের ক্যাচে ফিরে যেতে হয় এই ব্যাটারকে। পান্তের ব্যাট থেকে আসে ২৪ বলে ৩৬ রান।

এরপর দুবে ও হার্দিক পান্ডিয়া মিলে ভারতের ইনিংস টানতে থাকেন। নিজের তৃতীয় ওভারে এসে দুবেকে বোল্ড করে আউট করেন রিশাদ। ২৭ বলে হাঁফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন হার্দিক পান্ডিয়া। ইনিংস জুড়ে ৩টি ছক্কার সঙ্গে মেরেছেন ৪টি চার। আর ৩ রান নিয়ে অপরাজিত ছিলেন অক্ষর প্যাটেল। আর তাতেই বিশাল পুঁজি নিশ্চিত হয়ে যায় ভারতের।