জাতীয় ক্রিকেট লিগ

হ্যাটট্রিকসহ সুমনের ৭ উইকেট, ৪২ রানে অল আউট রাজশাহী

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
Publish Date: 12:47 Saturday, November 23, 2024

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||

মোহর শেখ অন্তরের বিপক্ষে তিনজন স্লিপ এবং একজন গালি নিয়ে বোলিং করেছিলেন সুমন খান। আসাদুজ্জামান পায়েলের বিপক্ষে পরের ডেলিভারিটা করতে স্লিপে আরও একজনকে ডেকে নিলেন ডানহাতি এই পেসার। অধিনায়ক শুভাগত হোম চৌধুরি বোলারের চাওয়া অনুযায়ী, মিড অফের ফিল্ডারকে কভারে এবং মিড অনে থাকা একজনে দাঁড় করালেন সিলি মিড অনের কাছাকাছি। ব্যাটারকে ভড়কে দিতে এমনভাবে ফিল্ডার সাজিয়ে সুমন নিজের আকাঙ্ক্ষিত ডেলিভারিটা করলেন গুড লেংথে, মিডল স্টাম্প বরাবর। আসাদুজ্জামান যেন খেলার চেষ্টাই করলেন না। বল প্যাডে আঘাত লাগতেই হ্যাটট্রিকের উল্লাসে মেতে উঠলেন ডানহাতি এই পেসার। সতীর্থরাও অভিবাদন জানালেন হ্যাটট্রিকসহ ৭ উইকেট নেয়া সুমনকে।

বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে টস জিতে বোলিংয়ে নামা ঢাকাকে ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই উইকেট এনে দেন সুমন। ২৪ বছর বয়সী পেসারের অফ স্টাম্পের ডেলিভারিতে ড্রাইভ করেছিলেন তানজিদ হাসান তামিম। মিড অফে দাঁড়িয়ে থাকা রুবেল মিয়া একটু লাফিয়ে উঠে ক্যাচ নিতেই রানের খাতা খোলার আগেই ফিরতে হয় বাঁহাতি ওপেনারকে। একই ওভারে রহমতউল্লাহ আলীকেও ফেরান সুমন। দারুণ এক ইয়র্কারে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি।

সাব্বির হোসেন ও মিজানুর রহমান প্রতিরোধ গড়ার আভাস দিলেও সেটা করতে দেননি সুমন। ঢাকার এই পেসার ফিরিয়েছেন ওপেনার সাব্বিরকে। অফ স্টাম্পের অনেকটা বাইরের ফুল ডেলিভারিতে ড্রাইভ করতে গিয়ে এজ হয়ে উইকেটের পেছনে আশিকুর রহমান শিবলির গ্লাভসে ক্যাচ দিয়েছেন ১০ রান করা রাজশাহীর ওপেনার। একই ওভারের পঞ্চম ডেলিভারিতে প্রীতম কুমারকেও ফেরান সুমন।

ডানহাতি পেসারের চতুর্থ স্টাম্পের বলে ডিফেন্স করতে গিয়ে এজ হয়ে আশিকুরের গ্লাভসে ক্যাচ দিয়েছেন। তানজিদ ও রহমতউল্লাহর মতো তাকেও সাজঘরের পথে হাঁটতে হয়েছে রানের খাতা খোলার আগেই। রাজশাহীর প্রথম চার ব্যাটারকে ফেরানো সুমনের সঙ্গে এবার উইকেট তোলায় মিশনে যোগ দেন এনামুল হক, রিপন মণ্ডল। দ্রুতই ফিরে গেছেন মিজানুর, এসএম মেহেরব হোসেন এবং শাখির হোসেন শুভ্র। ৪২ রানে ৭ উইকেট হারানো রাজশাহীকে আর কোন রান যোগ করতে দেননি সুমন।

নিজের অষ্টম ওভারে বোলিংয়ে এসে তৃতীয় বলে সানজামুলকে ফেরান ডানহাতি পেসার। অফ স্টাম্পে পড়ে বেরিয়ে যাওয়া ডেলিভারিতে ড্রাইভ করতে গিয়ে আশিকুরকে ক্যাচ দিয়েছেন। পরের বলে মোহরও ফিরেছেন উইকেটকিপারের গ্লাভসে ক্যাচ দিয়ে। পঞ্চম বলে আসাদুজ্জামানকে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে ফেলে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন সুমন। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এটি তার প্রথম হ্যাটট্রিক। এমন বোলিংয়ের দিনে ৭.৫ ওভারে ১৮ রান খরচায় ৭ উইকেট নিয়েছেন তিনি। আগের রাউন্ডে খুলনার বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন ঢাকার এই পেসার।

সুমনের এমন আগুনে বোলিংয়ের দিনে রাজশাহীর সাব্বির এবং মেহেরব কেবল দুই অঙ্ক স্পর্শ করতে পেরেছেন। ৫ ব্যাটার আউট হয়েছেন রানের খাতা খোলার আগেই। ব্যাটারদের এমন ব্যর্থতায় জাতীয় ক্রিকেট লিগের ষষ্ঠ রাউন্ডের প্রথম ইনিংসে মাত্র ৪২ রানে অল আউট হয়েছে রাজশাহী। বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এটিই দলীয় সর্বনিম্ন স্কোর। আগের সর্বনিম্ন দলীয় স্কোর ছিল বরিশাল বিভাগের। ২০২৩ সালে খুলনা বিভাগের বিপক্ষে মাত্র ৪৬ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল তারা। এ ছাড়া ২০১৪ সালে রংপুরের বিপক্ষে পঞ্চাশের আগে অল আউট হয়েছিল ঢাকা মেট্রো। সেবার তারা করতে পেরেছিল ৪৮ রান।