|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
আগের কয়েক সিরিজের পারফরম্যান্স আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছিল বাংলাদেশের। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে দেখা গেল উল্টো চিত্র। অজি নারী দলের নেয়া ২১৩ রানের পাহাড়সমান লক্ষ্য তাড়ায় টাইগ্রেসদের হারতে হল ১১৮ রানের বড় ব্যবধানে। আগে ব্যাট করে অস্ট্রেলিয়ার ৭ উইকেটে ২১৩ রানের জবাবে বাংলাদেশ ৯৫ রানে অলআউট হয়।
অস্ট্রেলিয়ার শক্তিশালি বোলিং লাইনের সামনে বাংলাদেশ ব্যাটারদের অগ্নিপরীক্ষা হওয়ারই ছিল। তেমনটাই হয়েছে। প্রথম ওভারেই উইকেট হারিয়ে শুরু হয় বাংলাদেশের ইনিংস। কিন্তু তিনটি রান আউট হজম করা কঠিন। উইকেটে সেট হওয়া নিগার সুলতানা ২৭ করে ফিরেছেন রান আউট হয়ে। এছাড়া মিডলঅর্ডারে আরও দুই নির্ভরযোগ্য ব্যাটার ফাহিমা খাতুন ও রিতু মনিও ফিরেছেন রান আউটের কবলে। তবে একটা পর্যায়ে সোবহানা মোস্তারি ও জ্যোতি মিলে ৪৯ রানের জুটিতে ভালো প্রতিরোধ গড়েছিলেন।
মোস্তারি ১৭ রানে আউট হওয়ার পর আর দাঁড়াতে পারেনি বাংলাদেশ। ইনিংসে তৃতীয় সর্বোচ্চ ১০ রান করেন মুর্শিদা খাতুন। এই তিন ব্যাটার ছাড়া আর কেউ দুঅঙ্কের ঘরে রান তুলতে পারেননি। অস্ট্রেলিয়ার অ্যাশলি গার্ডনার ৩টি ও কিম গার্থ ২ উইকেট নেন।
অস্ট্রেলিয়াকে আটকে দেয়ার সুযোগ ছিল আরও আগেই। কিন্তু বাংলাদেশের ফিল্ডারদের ব্যর্থতায় তা আর হল না। নড়বড়ে শুরুর পরও অস্ট্রেলিয়া নারী দল শেষ পর্যন্ত স্কোরবোর্ডে পুঁজি পেল ২০০'র ওপর। অ্যানাবেল সাদারল্যান্ডের হাফ সেঞ্চুরি ও আলাদা কিংয়ের ঝড়ো ইনিংসে ২১৩ রানে থামে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস।
টস জিতে অস্ট্রেলিয়াকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান নিগার সুলতানা জ্যোতি। আর জ্যোতির সিদ্ধান্তকে শুরুতেই সঠিক প্রমাণ করেন সুলতানা খাতুন। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই এই স্পিনার বিদায় করেন অজি ওপেনার ফিবি লিচফিল্ডকে। প্রথম বলেই ফেরেন তিনি। খানিক পর তিনে নামা এলিসি পেরিকেও আউট করেন এই স্পিনার।
২ উইকেট হারিয়ে বসা অস্ট্রেলিয়া আরও বিপদে পড়ে অধিনায়ক এলিসা হিলির বিদায়ে। দলীয় ২৭ রানে হিলি ফেরেন ২৪ রানে, তাকে বিদায় করেন মারুফা আক্তার। যদিও এর আগে ২বার জীবন পেয়েছেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ার দুর্গে পরের আঘাতটি করেন নাহিদা আক্তার। তাহিলা ব্যাকগ্রাকে দলীয় রান ৫০ হওয়ার আগেই ফেরান এই স্পিনার।
পঞ্চম উইকেটে জুটি গড়েন অ্যাশলে গার্নার ও বেথ মুনি। তবে ফাহিমা খাতুনের ঘুর্নিতে মুনি ফেরেন ২৫ রানে। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে অজিদের হাল ধরে এগিয়ে নিতে থাকেন গার্ডনার ও অ্যানাবেল স্যাদারল্যান্ড। নাহিদার ঘুর্নিতে অবশ্য জুটি ভাঙে দুজনের। ৩২ রানে ফেরেন এই অজি। ক্রিজে থাকাকালীন একবার জীবন পেয়েছিলেন তিনি।
সঙ্গীদের আসা যাওয়ার মিছিলে জর্জিয়া ওয়েরেহামের সাথে জুটি গড়ে দলকে ১৫০ দিকে নিয়ে যেতে থাকেন। তবে ১৪৬ রানে সঙ্গীকে হারিয়ে বসেন তিনি। তবে ৬৯ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে দলকে দেড়শ রানের পুঁজি এনে দেন এই অজি ব্যাটার।
মাইলফলকে পৌঁছে নীচের দিকের ব্যাটারদের নিয়ে স্কোরবোর্ডে রান যোগ করতে থাকেন অ্যানাবেল। তাকে দারুণ সঙ্গ দেন আলানা কিং। শেষ ওভারে ফাহিমাকে দুই ছক্কা হাঁকান এই ব্যাটার। ফলে অস্ট্রেলিয়ার রান পৌঁছে যায় ২০০'র কাছাকাছি। এরপর বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দলকে ২০০ রানের পুঁজি এনে দেন আলানা।
শেষ দুই বলে আরও দুই ছক্কা হাঁকিয়ে অজিদের ২১৩ রানের পুঁজি এনে দেন আলানা। শেষ ওভারে ২৯ রান দেন ফাহিমা। ৫৬ বলে ৬৭ রানের জুটি গড়ে অস্ট্রেলিয়ার লড়াই করার পুঁজি এনে দেন দুজন। ৩১ বলে ৪৬ রানে অপরাজিত থাকেন আলাদা ও সালারল্যান্ড করেন অপরাজিত ৫৮ রান।