|| ক্রিকফ্রেঞ্জি করেসপন্ডেন্ট ||
বাংলাদেশ দলে অভিষেক হয়েছে কদিন আগেই। জিম্বাবুয়ে-আফগানিস্তানের বিপক্ষে ত্রিদেশীয় সিরিজে একটি ম্যাচ খেলেই ভারত সফর। লেগ স্পিনার হিসেবে তাঁর প্রতি ছিল বাড়তি প্রত্যাশা। তরুণ তুর্কি আমিনুল ইসলাম বিপ্লবেরও বাড়তি পরিকল্পনা ছিল ছিল শক্তিশালী ভারতকে নিয়ে। স্পিন কোচ ড্যানিয়েল ভেটরির সহযোগিতায় নিজের পরিকল্পনা কতটুকু কাজে লাগাতে পেরেছেন বিপ্লব? ক্রিকফ্রেঞ্জি'র সঙ্গে আলাপচারিতায় ভারত সফর নিয়ে কথা বলেছেন তরুণ এই লেগ স্পিনার ।
প্রশ্নঃ ভারতে বড় একটি সিরিজ খেলে এলেন। অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
আমিনুল ইসলাম বিপ্লবঃ অভিজ্ঞতা তো ভালোই হলো। বিশ্বমানের দল ওরা। ওদের সাথে খেললে বোঝা যায় যে কোন জায়গায় দুর্বলতা আছে বা কোথায় উন্নতি করতে হবে। এই জিনিসগুলো বুঝতে পেরেছি কীভাবে নিজেদের আরও ভালোভাবে তুলে ধরা যায়। অভিজ্ঞতা ভালোই, এগুলো নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করব এখন।
প্রশ্নঃ শেষ ম্যাচে দুটি ক্যাচ মিস করেছেন। মনের অবস্থা অবশ্যই ভালো ছিল না। প্রথম ক্যাচ ও দ্বিতীয় ক্যাচ মিসের পরে ঠিক কেমন লেগেছে?
বিপ্লবঃ ক্যাচ মিস তো হয়ই। এগুলো খেলার অংশ। কিন্তু যখন হয় তখন এগুলো মাথায় রাখি না। সামনের দিকে কভার করার চেষ্টা করি। পরবর্তীতে যেগুলো আসবে সেটা যেন ভালোভাবে ধরতে পারি। বা এক্সট্রা অর্ডিনারি কিছু করে দেখাতে পারি। তো এটাই চিন্তা করি যে সুযোগ আসবে সেটা যেন ভালোভাবে নিতে পারি।
প্রশ্নঃ এই যে ক্যাচ মিস করেছেন, এক সময় কি মনে হয়েছে আপনি যেখানে যাচ্ছেন, বলও সেখানে যাচ্ছে?
বিপ্লবঃ এটা আসলে হয়ে গেছে। সবারই তো চেষ্টা থাকে নিজের সেরাটা দেয়ার। আমি যেখানে খেলি, চেষ্টা করি নিজের শতভাগ দেয়ার। কিন্তু ওটা হয়ে গেছে। এগুলো বাদ দিয়ে এখন সামনের দিকে আগানোর চেষ্টা করছি। কীভাবে আরও উন্নতি করা যায়, কীভাবে টপ লেভেলে ভালো ক্রিকেট খেলা যায় সেই চিন্তা করছি।
প্রশ্নঃ আপনার দুটি ক্যাচ মিসের কারণে ম্যাচে প্রভাব পড়েছে। এটাকে কি শিক্ষা মনে হয়েছে?
বিপ্লবঃ এর আগে কখনোই আমাকে এই রকম শিক্ষার মুখোমুখি হতে হয়নি। জীবনে প্রথমবার এমন হলো। এটা খুব ভালো অভিজ্ঞতা। এখন বুঝি যে ফোকাস আরও বাড়াতে হবে।
প্রশ্নঃ অধিনায়ক বা কোচ কিছু বলেছে? অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ রাগ করেছিলেন?
বিপ্লবঃ না, এ রকম কিছুই না। কেউ কিছুই বলেনি। দলের সবার আমার ওপর বিশ্বাস আছে যে ভালোই হয় সব সময় ফিল্ডিং। তো ওটাই বলছি যে, এটা ভুলে সামনে ফোকাস করতে হবে।
প্রশ্নঃ ক্যাচ মিসের প্রভাব কি বোলিংয়ে কোনোভাবে পড়েছিলো?
বিপ্লবঃ না, এ রকম কোনও কিছু ছিল না। কারণ আমার কাজ হচ্ছে বোলিং করা। যখন বোলিং করি, তখন সেটা নিয়ে সিরিয়াস থাকি। যখন যে কাজটাই করি, তখন সেটার প্রতি ফোকাস দেই। একটার জন্য আরেকটায় কিছু হবে এমনটা ভাবি না।
প্রশ্নঃ ইমার্জিং কাপ আরেকটা মঞ্চ। সেখানে খেলছেন এবার। কীভাবে দেখছেন এই মঞ্চ?
বিপ্লবঃ এটা আবার নিজেকে প্রস্তুত করার আরও ভালো একটা মঞ্চ আমি মনে করি। যেহেতু সামনে বিপিএল আছে, আবার সামনে নতুন সিরিজ আছে। এখান থেকে ভুল শুধরে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।
প্রশ্নঃ বাংলাদেশ ক্রিকেটে নতুন কেউ এলে অনেক লাইমলাইটে থাকে। এটা চাপ নাকি অনুপ্রেরণা?
বিপ্লবঃ এগুলো অনুপ্রেরণা হিসেবেই কাজ করে। আরও ভালো করার একটা আগ্রহ জাগে। আরও ভালো করতে হবে। ভালো করলে আরও ভালো কিছু হবে।
প্রশ্নঃ স্পিন বোলিং কোচ ড্যানিয়েল ভেটরি অনেক নামি একজন কোচ। তাঁর কাছ থেকে কী শিখতে পেরেছেন, যা আপনার আপনার ম্যাচে কাজে লেগেছে?
বিপ্লবঃ ওর কাছ থেকে ম্যাচ সেন্স পেয়েছি। গেম রিডিং করার ক্ষমতা বেড়েছে। ম্যাচে কীভাবে কাজ করতে হয় বুঝেছি। তো এই জিনিসটা একটা বোলারের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। যে কোনো অবস্থায় কীভাবে বোলিং করতে হবে, কী করলে ভালো হয় দলের জন্য। এই বিষয়গুলো সে খুব ভালোভাবে বুঝিয়েছে।
প্রশ্নঃ বড় দলের বিপক্ষে যখন খেলা থাকে তখন স্বাভাবিকভাবেই অনেক পরিকল্পনা থাকে। মানে কোন ব্যাটসম্যানকে কীভাবে বিপদে ফেলতে পারবেন এসব নিয়ে। এখন সিরিজ শেষ। কী মনে হচ্ছে নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে? কতোটা সফল হতে পেরেছেন?
বিপ্লবঃ চাওয়ার তো কোনও শেষ নাই। যখন যেখানে খেলি সেই ম্যাচের অবস্থা অনুযায়ী খেলি। নিজের সেরাটা দেয়ার চেষ্টা করি। সেরার চেয়েও বেশি দেয়ার চেষ্টা করি, কেননা যা করব তা দলের জন্য ভালো। তো ওটাই চেষ্টা করি। আরও কাজ করলে আরও ভালো করার সুযোগ থাকবে।
প্রশ্নঃ এখন পর্যন্ত আপনি যতগুলো ম্যাচ খেলেছেন, সবচেয়ে অনুপ্রেরণাদায়ক মন্তব্য কোন সিনিয়র থেকে পেয়েছেন?
বিপ্লবঃ রিয়াদ ভাই, মুশফিক ভাই, সৈকত ভাই।
প্রশ্নঃ কী বলেছেন তারা?
বিপ্লবঃ রিয়াদ ভাই সমসময় সমর্থন করে। সৈকত ভাই ব্যক্তিগতভাবে ডাকে যে, আজকে এই এই কাজ করতে হবে। এই কাজ করলে ভালো হবে। বা ম্যাচ শেষে বলে তুই যদি এই এই জিনিসগুলো এভাবে করতি ভালো হতো। সৈকত ভাই বললে বিষয়গুলো ভালো লাগে অনেক।
ছবিঃ বিসিবি