স্কটল্যান্ডকে হারিয়ে বাংলাদেশের মেয়েদের জয়ের হ্যাটট্রিক

ছবি: আইসিসি

যদিও সেটা হতে দেননি প্রিয়ানাজ চ্যাটার্জি ও র্যাচেল স্ল্যাটার। সাবলীল ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশকে ভয় ধরাচ্ছিলেন তারা দুজন। প্রিয়ানাজের সঙ্গে হাফ সেঞ্চুরি পেয়েছেন স্ল্যাটারও। দুজনে মিলে গড়েছেন ১১৫ রানের জুটিও। তবে বাংলাদেশকে হারাতে যথেষ্ট ছিল না তাদের দুজনের শতরানের জুটি। শেষ পর্যন্ত নাহিদা, জান্নাতুল ফেরদৌস সুমনাদের বোলিংয়ে ৩৪ রানের জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে এটি বাংলাদেশের মেয়েদের টানা তৃতীয় জয়।
ক্যারিয়ার সেরা র্যাঙ্কিংয়ে জ্যোতি-শারমিন, রাবেয়া-রিতুর উন্নতি
১২ ঘন্টা আগে
লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে তৃতীয় ওভারেই বাংলাদেশকে উইকেট এনে দেন মারুফা আক্তার। ডানহাতি পেসারের বলে বোল্ড হয়েছেন আবি অ্যাটকিন। পরবর্তীতে ক্যাথরিন ব্রাইস ও পিপ্পা স্প্রাউলকে ফেরান নাহিদা। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে স্কটল্যান্ড। দলের রান একশ হওয়ার আগেই ফিরে যান অ্যাইলসা লিস্টার ও ম্যাগান ম্যাকোল। স্কটল্যান্ডের রান একশ পার হওয়ার পর আউট হয়েছেন সারাহ ব্রাইস ও ক্যাথরিন ফ্রেজার।
১১০ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়েন স্কটিশরা। তবে এমন সময় দারুণ এক জুটি গড়ে তোলেন প্রিয়ানাজ ও স্ল্যাটার। শুরুতে একটু দেখেশুনে খেললেও উইকেটে থিতু হওয়ার পর দ্রুত রান তুলতে থাকেন তারা দুজন। ৬৩ বলে ৬১ রানের ইনিংস খেলা প্রিয়ানাজকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন নাহিদা। পরবর্তীতে স্ল্যাটার ৭৩ বলে ৬১ রানে অপরাজিত থাকলেও জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল না। ৯ উইকেট হারিয়ে স্কটল্যান্ডকে থামতে হয় ২৪২ রানে। বাংলাদেশের হয়ে চারটি উইকেট নিয়েছেন নাহিদা।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশকে ভালো শুরুর আভাস দিয়েছিলেন ইশমা তানজিম ও ফারজানা। সাবধানী ব্যাটিংয়ে দলকে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করলেও জুটি খুব বেশি বড় করতে পারেননি তারা। ইনিংসের নবম ওভারে বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন প্রিয়ানাজ চ্যাটার্জি। ডানহাতি পেসারের লেংথ ডেলিভারিতে ডাউন দ্য উইকেট এসে খেলার চেষ্টায় মিড অফে ক্যাচ দিয়েছেন ইশমা। প্রথম দুই ম্যাচেও রানের দেখা না পাওয়া ডানহাতি ওপেনারকে ফিরতে হয় ১৪ রানে।

দ্বিতীয় উইকেটে অবশ্য দারুণ এক জুটি গড়ে তোলেন ফারজানা ও শারমিন। তাদের দুজনের ব্যাটেই একশ পার করে বাংলাদেশ। সাবলীল ব্যাটিংয়ে ৬৭ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেন ফারজানা। নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে এটি তার দ্বিতীয় পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস। একই ওভারে ক্যাথরিনকে ফাইন লেগ দিয়ে চার মেরে ৭১ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেছেন শারমিন। থাইল্যান্ডের বিপক্ষে হাফ সেঞ্চুরি করা শারমিনের চলমান আসরে এটি দ্বিতীয় পঞ্চাশ।
আগামী মাসে বাংলাদেশে আসছে সাউথ আফ্রিকার মেয়েরা
১৪ এপ্রিল ২৫
যদিও হাফ সেঞ্চুরির পর টিকতে পারেননি তাদের দুজনের কেউই। ক্যাথরিনের লেগ স্টাম্পের বাইরের বলে এজ হয়ে উইকেটকিপার সারাহর গ্লাভসে ক্যাচ দিয়েছেন ৫৭ রান করা শারমিন। একটু পর ক্লো অ্যাবেলের বলে আউট হয়েছেন ৫৭ রান করা ফারজানাও। এখন পর্যন্ত ব্যাট হাতে ছন্দ না পাওয়া সোবহানা মোস্তারি ফিরেছেন দ্রুতই। র্যাচেল স্ল্যাটারের বলে লেগ বিফোর উইকেট হয়ে ফিরতে হয়েছে ৯ রান করা এই ব্যাটারকে।
আগের ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে হাফ সেঞ্চুরি করা রিতু মনি আউট হয়েছেন ১২ রানে। পরবর্তীতে ফাহিমাকে সঙ্গে নিয়ে জুটি গড়ে তোলেন জ্যোতি। শুরু থেকেই আক্রমণাত্বক ব্যাটিং করতে থাকা ডানহাতি ব্যাটার হাফ সেঞ্চুরি করেছেন ৩৯ বলে। ব্যাট হাতে দারুণ ছন্দে থাকা জ্যোতির নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের চলতি আসরে টানা তিন পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস। প্রথম ম্যাচেই সেঞ্চুরি করা বাংলাদেশের অধিনায়ক হাফ সেঞ্চুরি পেলেন পরের দুই ম্যাচেও।
শেষের দিকে ২২ বলে ২৬ রান করা ফাহিমা আউট হলেও অপরাজিত ছিলেন জ্যোতি। ১১ চারে ৫৯ বলে খেলেছেন ৮৩ রানের ইনিংস। ফারজানা ও শারমিনের হাফ সেঞ্চুরির পর জ্যোতির এমন ইনিংসে ৬ উইকেটে ২৭৬ রানের জুটি পায় বাংলাদেশ। মেয়েদের ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের এটিই দলীয় সর্বোচ্চ রানের পুঁজি। পেছনে ফেলেছেন থাইল্যান্ডের বিপক্ষে করা ২৭১ রানের পুঁজিকে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল- ২৭৬/৬ (৫০ ওভার) (ফারজানা ৫৭, শারমিন ৫৭, জ্যোতি ৮৩*, ফাহিমা ২৬; ক্যাথরিন ২/৫৩)
স্কটল্যান্ড নারী ক্রিকেট দল- ২৪২/৯ (৫০ ওভার) (প্রিয়নাজ ৬১, স্ল্যাটার ৬১*; নাহিদা ৪/৪০)