promotional_ad

২৫ বছরেও টেস্ট সংস্কৃতি গড়ে না ওঠায় শান্তর আক্ষেপ, নতুন কিছু দেখানোর প্রতিশ্রুতি

সিলেট টেস্টের আগে অনুশীলনে বাংলাদেশ, ক্রিকফ্রেঞ্জি
হ্যামিল্টন মাসাকাদজা, গ্রায়েম ক্রেমার, ভুসি সিবান্দা, ব্রেন্ডন টেলর ও এল্টন চিগাম্বুরার মতো ক্রিকেটারদের নিয়ে জিম্বাবুয়ের প্রধান কোচ হিসেবে ২০০৫ সালে বাংলাদেশে এসেছিলেন ফিল সিমন্স। ২০ বছরের বেশি সময় জিম্বাবুয়ে যখন আবারও বাংলাদেশে টেস্ট খেলতে এসেছে তখন বাংলাদেশের প্রধান কোচের দায়িত্বে সেই সিমন্স। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিলেট টেস্ট শুরুর আগে দুদিন আগে সংবাদ সম্মেলনে এসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাবেক ক্রিকেটার জানিয়ে গেলেন, ২০০৫ সালের তুলনায় বাংলাদেশ অনেক উন্নতি করেছে। একদিন পর অর্থাৎ টেস্টের আগের দিনে হাসিমুখে সংবাদ সম্মেলনে এলেন নাজমুল হোসেন শান্ত।

promotional_ad

প্রধান কোচ যেখানে উন্নতি দেখছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক সেখানে বলে গেলেন, ‘আমাদের গত ২০-২২ বছরে টেস্ট ক্রিকেট একই রকম ছিল, খুব বেশি উন্নতি হয়নি।’ বাস্তবতা মেনেই কোনো রাখঢাক রাখলেন না শান্ত। বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটের উন্নতি হয়নি ব্যাপারটা একেবারেই এমন নয়। তবে বিশ্বের অন্য দলগুলোর তুলনায় কতটা উন্নতি হয়েছে সেটা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যেতেই পারে। ম্যাচের আগের দিন প্রশ্নগুলো হওয়ার কথা ছিল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের একাদশ কেমন, কন্ডিশন কেমন কিংবা দল হিসেবে বাংলাদেশের পরিকল্পনা কী।


আরো পড়ুন

‘খেললেই জিম্বাবুয়ে বুঝবে নাহিদ কত গতিতে বল করে’

৫ ঘন্টা আগে
অনুশীলনে নাহিদ রানা, ক্রিকফ্রেঞ্জি

অথচ ১২-১৩ মিনিটের সংবাদ সম্মেলনের প্রায় পুরোটা সময় জুড়েই শান্তকে কথা বলতে হয়েছে বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটের সংস্কৃতি নিয়ে। ২০০০ সালের ২৬ জুন আইসিসির পূর্ণ সদস্য দেশ হিসেব স্বীকৃতি পেয়েছিল বাংলাদেশ। টেস্ট ক্রিকেট দুই যুগ পেরিয়ে গেলেও এখনো বাংলাদেশ পুরোদমে একটা টেস্ট সংস্কৃতি গড়ে ওঠার ব্যর্থতার কারণেই হতাশা প্রকাশ করলেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট কিংবা লিগের যুগে সবার প্রাধান্যটা ২০ ওভারের ক্রিকেট নিয়েই। এসএ২০ লিগের জন্য নিউজিল্যান্ডে দ্বিতীয় সারির টেস্ট দল পাঠিয়ে সেটা প্রমাণ করেছে সাউথ আফ্রিকা।


যদিও অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড কিংবা ভারতের মতো দলগুলোর এখনো পছন্দ কিংবা প্রাধান্যের তালিকায় টেস্ট ক্রিকেটই। কিছুদিন পর পর টেস্ট ক্রিকেটের কাঠামো পরিবর্তন, ক্রিকেটারদের সুযোগ-সুবিধা, বেতন বাড়ানো তো এসবই প্রমাণ করে। তবে ২৫ বছরেও নিজেদের ওইরকম একটা সংস্কৃতিতে নিয়ে যেতে না পারায় আক্ষেপ ঝড়লো বাংলাদেশের অধিনায়কের কণ্ঠে। তবে নতুন কিছুর আশাও দেখিয়েছেন শান্ত। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের সবশেষ চক্রে বিশেষ কিছু করতে না পারলেও নিজেদের উন্নতি ছাপ রেখেছে বাংলাদেশ।


সবশেষ চক্রে ১২ টেস্ট খেলা শান্ত-মুমিনুল হকরা জয় পেয়েছে চারটিতে। পাকিস্তানের মাটিতে গিয়ে দুই টেস্ট জেতার পাশাপাশি ওয়েস্ট ইন্ডিজকেও হারিয়েছে তাদেরই ঘরে। নতুন টেস্ট সংস্কৃতি তৈরিতে গত বছর থেকেই নিজেদের মাঝে আলোচনা করছেন বলে জানান শান্ত। পাশাপাশি নতুন প্রধান কোচের পরিকল্পনার সঙ্গে নিজেরাও যতটা সম্ভব ইনপুট দেয়ার চেষ্টা করছেন ক্রিকেটাররা। বাংলাদেশের অধিনায়কের বিশ্বাস চলতি বছর থেকেই বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটে নতুন কিছু দেখা যাবে।


সিলেটে প্রথম টেস্টের আগে সংবাদ সম্মেলনে শান্ত বলেন, ‘(টেস্ট সংস্কৃতি) খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমার মনে হয় এত বছর টেস্ট খেলার পরও যখন টেস্ট সংস্কৃতি নিয়ে আমাদের কথা বলতে হয় এটা অবশ্যই দুঃখজনক। আমার মনে হয় গত বছর থেকে যদি আমরা শুরু করি গত বছর আমরা চারটা ম্যাচ জিতলাম টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে ১২ টা টেস্টে মধ্যে। এবং চারটা ম্যাচই বড় দলের বিপক্ষে।’


promotional_ad



আরো পড়ুন

জিতেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিদায়, বিশ্বকাপে বাংলাদেশ

৪৪ মিনিট আগে
আইসিসি

‘গত বছর থেকেই আমাদের টেস্ট দলটা কিভাবে একটা সংস্কৃতি তৈরি করতে পারি, কিভাবে খেলাটা খেলতে চাই এই বিষয়গুলো নিয়ে কথাবার্তা হচ্ছিল। নতুন কোচ আসার পর তার একটা পরিকল্পনা আছে এবং সে আসলে দলটাকে কিভাবে সামনের দিকে নিয়ে যেতে চায় যেগুলো ইতোমধ্যে খেলোয়াড়দের সঙ্গে শেয়ার করেছে। পাশাপাশি আমরা যারা খেলছি আমাদের একটা ইনপুট তো ছিল। আমি আশা করব এবছর যে ৫-৬টা টেস্ট ম্যাচ আছে নতুন কিছু আপনারা দেখতে পারবেন ইনশাআল্লাহ।’


বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সমস্যার নাম দূর্বল ঘরোয়া ক্রিকেট। ১৯৯৯ সালে জাতীয় ক্রিকেট লিগ শুরু হলেও টেস্ট ক্রিকেটার তৈরি করার জন্য পর্যাপ্ত হয়ে উঠতে পারেনি। কয়েক বছর আগেও দেশের ঘরোয়া টুর্নামেন্টগুলোকে বলা হতো ‘পিকনিক’ ক্রিকেট। ঘরোয়াতে পর্যাপ্ত প্রতিযোগিতা না থাকায় এমন অবস্থায় পড়তে হচ্ছে বাংলাদেশকে।


টেস্ট সংস্কৃতি গড়ে না ওঠার পেছনে ঘরোয়া ক্রিকেটের পাশাপাশি ক্রিকেট প্রশাসকদের ভাবনা ও ক্রিকেট পরিচালনার ধরন, ক্রিকেটারদের মানসিকতা সবচেয়ে বেশি দায়ী। এ ছাড়া কাঠামোগত উন্নতির অভাবেও সংস্কৃতি গড়ে তোলা যাচ্ছে না বলে ধারণা করছেন অনেকে। টেস্ট ক্রিকেটের সংস্কৃতি তৈরিতে ম্যানেজমেন্ট ও ক্রিকেট বোর্ডে থাকা প্রশাসকদের সহায়তা চান শান্ত। বাংলাদেশের অধিনায়ক মনে করেন, পরিবর্তনটা দেশের ক্রিকেটে কাজে দেবে।


শান্ত বলেন, ‘অধিনায়ক হিসেবে আমি যেটা চিন্তা করি প্রত্যেকটা ম্যাচ যেন জেতার জন্য খেলি। এখানে আসলে সেইফ ক্রিকেট খেলার ইচ্ছে আমাদের কারোরই নাই। আমি যেটা একটু আগেও বললাম যে নতুন কিছু আসলে আমরা চেষ্টা করব এবং এটাও শুরু হবে আগামীকাল থেকে। আমার মনে হয় ওইটার জন্য যে ধরনের মন-মানসিকতা বা প্রস্তুতি থাকা দরকার খেলোয়াড়রা নিচ্ছে।’


‘পাশাপাশি আশা করব যারা আমাদের সহায়তা করে, যারা ম্যানেজমেন্টে আছেন, যারা ক্রিকেট বোর্ডে আছেন তারাও আমাদের সহায়তা করবেন এই বিষয়গুলো নিয়ে। আমি বিশ্বাস করি যেহেতু আমাদের গত ২০-২২ বছরে টেস্ট ক্রিকেট একই রকম ছিল, খুব বেশি উন্নতি হয়নি। নিশ্চয় আমাদের কোনো কিছু পরিবর্তনের দরকার আছে। ওই পরিবর্তনটাই করার আমরা চিন্তা করছি এবং আমি আশা করব এই পরিবর্তনটা আমাদের টেস্ট ক্রিকেটে কাজে আসবে।’


<img src ='/public/storage/inside_article/images/e7v2gnmuu.jpeg'>


পাকিস্তান কিংবা ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জেতা টেস্ট নিজেদের সবটা উজাড় করে দিয়ে পুরোটা সময় জুড়ে আগ্রাসী মনোভাব দেখিয়েছে বাংলাদেশ। প্রতিটি টেস্টেই সেটার ধারাবাহিকতা চান শান্ত। এ ছাড়া সবশেষ কয়েক টেস্ট ধরেই বাংলাদেশের টেস্ট দলের বড় সমস্যার নাম ব্যাটিং। টপ অর্ডাররা যেন ব্যাট হাতে রানের দেখাই পাচ্ছেন না। বোলারদের ২০ উইকেট নেয়ার সুযোগ করে দিতে স্কোর বোর্ডের পর্যাপ্ত রান তোলার তাগিদ দিয়েছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক। সবমিলিয়ে চিন্তা-ভাবনায় পরিবর্তন চান তিনি।


নতুন বছরে টেস্টে নতুন কিছু দেখাতে কী ধরনের পরিবর্তন করা হচ্ছে এমনটাই জানতে চাওয়া হয়েছিল শান্তর কাছে। এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘চিন্তা ভাবনায়। আমি একটু আগে যেটা বললাম জেতার জন্য খেলা পরিস্থিতি যেমনই হোক জেতার মন-মানসিকতা থাকা। ২০ উইকেট নেয়ার জন্য বোর্ডে যে ধরনের রান থাকা প্রয়োজন ওই রান যেন আমরা ব্যাটিং ইউনিট দিতে পারি। এই বিষয়গুলো নিয়ে আলাপ-আলোচনা হয়েছে।’


‘পাশাপাশি পরিস্থিতি যাই থাক শরীরের ভাষা... একটু আগে যেটা নিয়ে কথা হলো আমরা যখন ওয়েস্ট ইন্ডিজে জিতলাম সবাই কিন্তু জেতার জন্য ওইরকম শারীরিকভাষা, ওইরকম আগ্রাসী ছিল। ওই জিনিসগুলো গুরুত্বপূর্ণ, ওই জিনিসগুলো ধারাবাহিকভাবে আমরা প্রতি ম্যাচে করতে পারি এটা দেখার বিষয়। আমি আশা করব আমাদের খেলোয়াড়রা যারা আছি আমরা কন্টিনিউ করবো।’



আরো খবর

সম্পাদক এবং প্রকাশক: মোঃ কামাল হোসেন

বাংলাদেশের ক্রিকেট জগতে এক অপার আস্থার নাম ক্রিকফ্রেঞ্জি। সুদীর্ঘ ১০ বছর ধরে ক্রিকেট বিষয়ক সকল সংবাদ পরম দায়িত্ববোধের সঙ্গে প্রকাশ করে আসছে ক্রিকফ্রেঞ্জি। প্রথমে শুধুমাত্র সংবাদ দিয়ে শুরু করলেও বর্তমানে ক্রিকফ্রেঞ্জি একটি পরিপূর্ণ অনলাইন মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম।

মেইল: cricfrenzy@gmail.com
ফোন: +880 1305-271894
ঠিকানা: ২য় তলা , হাউজ ১৮, রোড-২
মোহাম্মাদিয়া হাউজিং সোসাইটি,
মোহাম্মাদপুর, ঢাকা
নিয়োগ ও বিজ্ঞপ্তি
বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ
নিয়ম ও শর্তাবলী
নীতিমালা
© ২০১৪-২০২৪ ক্রিকফ্রেঞ্জি । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
footer ball