promotional_ad

ক্রিকেটানন্দে ক্রিকেট মাঠে শিক্ষা সফর

শিক্ষা সফরের অংশ হিসেবে সিলেট স্টেডিয়ামে খেলা দেখতে এসেছেন শিক্ষার্থীরা
‘ক্রিকেট মাঠে শিক্ষা সফর’ একটু অদ্ভুত শোনাচ্ছে তাই না? শোনাটাও একটু স্বাভাবিকই। শিক্ষা সফরের জন্য বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বেছে নেয়া হয় দর্শনীয় কিংবা ঐতিহাসিক কোনো স্থানকে। ছোটবেলা থেকে তো এমনটা দেখেই বড় হয়েছি। সিলেটে অবশ্য এদিন ভিন্ন কিছুরই সাক্ষী হতে হলো। সিলেটকে বলা হয়ে থাকে চায়ের শহর। স্টেডিয়ামের পাশে উঁচু নিচু টিলার সঙ্গে আছে বিস্তৃত চা বাগান। তারই কোল ঘেঁষে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম।

promotional_ad

বছর পাঁচেক পর সিলেটে টেস্ট হলেও সেখানে নেই তেমন কোনো উত্তেজনা। এখানে খেলা হচ্ছে এমনটা জানেনও না অনেকে। ম্যাচের আগেরদিন সেভাবে টিকিটই বিক্রি হয়নি। হাতে গোনা কয়েকজন এসেছিলেন টিকিট সংগ্রহের জন্য। মঙ্গলবারের রৌদ্রজ্জ্বল সকালে বাংলাদেশ আগে ব্যাটিং করতে নামলেও গ্যালারি নেই তেমন দর্শক। বেলা এগারোটা নাগাদ খুব বেশি হলে একশ দর্শক ছিল গ্যালারিতে।


আরো পড়ুন

কলকাতার নতুন সহকারী কোচ গিবসন

৮ মার্চ ২৫
বাংলাদেশের পেস বোলিং কোচ হিসেবে কাজ করেছেন ওটিস গিবসন, ফাইল ছবি

দ্বিতীয় সেশনে অবশ্য দেখা যায় একটু ভিন্ন চিত্র। সেখানে আরও ভিন্নতা তৈরি করেছে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার ভাটেরা গার্লস স্কুলের শিক্ষার্থীরা। গায়ে স্কুলের সাদা পোশাক, মাথায় ‘সাবাস বাংলাদেশ’ লেখা ব্যান্ড, হাতে বাংলাদেশের ছোট ছোট পতাকা, কয়েকজনের হাতে ব্যান্ড দলের মতো ব্যান্ডও। দল বেঁধে ঢুকতেই নজর কাড়ে সবার। ১৮০ শিক্ষার্থীর সঙ্গে এসেছিলেন ২০ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা। সবমিলিয়ে দুইশ জনের বহর নিয়ে লাক্কাতুরা থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরের ভাটেরা থেকে এসেছিলেন তারা।


সারিবদ্ধভাবে বসে থাকা সবাই ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তখন মাহমুদুল হাসান জয় এবং মুমিনুল হক মিলে বাংলাদেশকে বেশ ভালোভাবেই এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। বাংলাদেশের দারুণ ব্যাটিংয়ে উল্লাসে ফেঁটে পড়ছিলেন ভাটেরা গার্লস স্কুলের এই কিশোরীরা। কয়েকজন মিলে দুটি ব্যানার ধরে বসে বাংলাদেশকে সমর্থন দিচ্ছিলেন। যেখানে একটাতে লেখা ‘সাবাশ বাংলাদেশ’ অন্য একটিতে লেখা ‘স্টাডি ট্যুর’। যার বাংলা অর্থ শিক্ষা সফর কিংবা ভ্রমণ।


মাঠে কিংবা গ্যালারিতে শিক্ষার্থীদের আসার গল্পটা নতুন নয়। ক্লাস শেষ হলেই খেলা দেখতে মাঠে চলেন আসেন শিক্ষার্থীরা। কেউ কেউ তো ক্লাস ফাঁকি দিয়েও আসেন। মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে প্রায়শই এমন চিত্র দেখা যায়। কিন্তু শিক্ষা সফর? ক্রিকেট মাঠে শিক্ষা সফরে এসেছে, এমনটা নিশ্চয় এর আগে কখনও শোনেননি। ক্রিকফ্রেঞ্জিকে সেই গল্পই শুনিয়েছেন স্কুলটির সহকারী প্রধান শিক্ষক কাওসার আহমেদ মুন্না।



promotional_ad

তিনি বলেন, ‘আমাদের শিক্ষা সফরের অংশ হিসেবে আজকে আমরা সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে খেলা দেখতে এসেছি। আমরা কিছুটা সময় প্রথম দিনের খেলা উপভোগ করলাম। আমাদের এলাকাটা একটু গ্রামীণ এলাকা। আমাদের যেহেতু গার্লস স্কুল তাই তাদের খুব বেশি সুযোগ থাকে না কিছু করার। তারা চাইলেই বাইরে যেতে পারে না।’


আরো পড়ুন

আমি নিজের চেয়ে দলকে সবসময় ওপরে রাখি: হার্দিক

১ ঘন্টা আগে
শিরোপা জয়ের পর হার্দিক, আইসিসি

‘বছরে তারা একবার কিংবা দুবার তারা শিক্ষা সফরে যাওয়ার সুযোগ পায়। সেটার মাধ্যমেই নতুন জিনিস নিয়ে তারা জানতে পারে। তারা যেহেতু বাইরে যেতে পারে না তাই বেশিরভাগ সময় তারা টেলিভিশনে খেলা দেখে। মাঠে বসে খেলা দেখতে পারাটা তাদের জন্য ভালো সুযোগ এবং দারুণ মুহূর্ত ছিল তাদের জন্য।’


গত বছরও সিলেটেই শিক্ষা সফরে এসেছিলেন স্কুলটির শিক্ষার্থীরা। সেবার স্টেডিয়ামের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় শিক্ষার্থীদের আবদার ছিল তারা একদিন স্টেডিয়ামে খেলা দেখতে চায়। বছর খানেক পেরিয়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ড সিরিজে সেই সুযোগ লুফে নেয় তারা। শেষ পর্যন্ত বাস্তবায়ন করতে পেরে খুশি স্কুল কতৃপক্ষ।


কাওসার মুন্না বলেন, ‘মেয়েদের আবদার ছিল আমরা যেন তাদের খেলা দেখার একটা ব্যবস্থা করে দেই। এখন যেহেতু শীতের সময় এবং বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ডের খেলা চলে তাই মনে হলো এটাই আমাদের জন্য সেরা সময়। সেটা ভেবেই শিক্ষা সফরের অংশ হিসেবে আমরা তাদেরকে খেলা দেখাতে স্টেডিয়ামে নিয়ে আসি।’



স্টেডিয়ামে যেহেতু খুব বেশি আসার সুযোগ নেই তাই মুশফিকুর রহিমদের টেলিভিশনের পর্দাতেই দেখতে হয় ভাটেরা গার্লস স্কুলের এই মেয়েদের। যাদের খেলা টিভিতে দেখেছেন তাদের সামনে থেকে দেখতে পেরে বেশ উচ্ছ্বসিত তারা। নিজের উচ্ছ্বাসের কথাই জানালেন দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী পূজা কর্মকার। তিনি বলেন, ‘সারাজীবন তাদের টিভিতে দেখেছি, আজ প্রথমবার সামনে থেকে স্টেডিয়ামে বসে দেখলাম। আমার ছোট বেলা থেকেই শখ ছিল যাদের টিভিতে দেখেছি তাদের সঙ্গে একদিন দেখা করব। সেই আশা পূরণ হয়েছে।’


শখ পূরণ হওয়ার সঙ্গে আক্ষেপও আছে পূজার। দশম শ্রেণির এই ছাত্রীর পছন্দের ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ও মুশফিক। চোটের কারণে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলছেন না সাকিব। মুশফিক এদিন খেললেও তাকে দেখার সুযোগ হয়নি পূজার। কারণ তারা যতক্ষণ মাঠে ছিলেন তখন ব্যাটিংয়ে নামেননি মুশফিক। স্টেডিয়ামের বাইরে দুপুরে লাঞ্চের ব্যবস্থা থাকায় দেড়টায় বের হয়ে যেতে হয় তাদের।


সাকিব ও মুশফিককে দেখতে না পারলেও যাদের দেখেছেন তাদের দেখেও খুশি পূজা। তিনি বলেন, ‘আমি সবসময় চাইতাম সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিমদের দেখব। তবে যাদের দেখেছি তাদের দেখেও যথেষ্ট খুশি আমরা।’ কখনও সাকিব ও মুশফিকের সঙ্গে দেখা হলে তাদের সাফল্যের রহস্য জানতে চান পূজা।



আরো খবর

সম্পাদক এবং প্রকাশক: মোঃ কামাল হোসেন

বাংলাদেশের ক্রিকেট জগতে এক অপার আস্থার নাম ক্রিকফ্রেঞ্জি। সুদীর্ঘ ১০ বছর ধরে ক্রিকেট বিষয়ক সকল সংবাদ পরম দায়িত্ববোধের সঙ্গে প্রকাশ করে আসছে ক্রিকফ্রেঞ্জি। প্রথমে শুধুমাত্র সংবাদ দিয়ে শুরু করলেও বর্তমানে ক্রিকফ্রেঞ্জি একটি পরিপূর্ণ অনলাইন মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম।

মেইল: cricfrenzy@gmail.com
ফোন: +880 1305-271894
ঠিকানা: ২য় তলা , হাউজ ১৮, রোড-২
মোহাম্মাদিয়া হাউজিং সোসাইটি,
মোহাম্মাদপুর, ঢাকা
নিয়োগ ও বিজ্ঞপ্তি
বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ
নিয়ম ও শর্তাবলী
নীতিমালা
© ২০১৪-২০২৪ ক্রিকফ্রেঞ্জি । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
footer ball