|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
বিশ্বকাপ এলেই বাংলাদেশকে নিয়ে আশা বুক বাঁধতে থাকেন সমর্থকরা। সবশেষ কয়েক বছরে অবশ্য সেই আশায় কেবল গুঁড়েবালিই দিয়েছে। তবুও আইসিসির টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ নিজেদের ছাড়িয়ে যাবে এমন প্রত্যাশা করেন ক্রীড়ামোদী মানুষেরা। কেউ কেউ তো স্বপ্ন দেখেন বিশ্বকাপ ট্রফি উঁচিয়ে ধরার। তবে বাস্তবতার গল্পটা একেবারেই ভিন্ন। প্রত্যাশার পারদে চেপে বিশ্বকাপে গেলেও সেটাকে ছুঁয়ে দেখতে পারেননি ক্রিকেটাররা।
সবশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপই তো সেটার উৎকৃষ্ট উদাহরণ। চেনা কন্ডিশনে খেলার সঙ্গে নিজেদের সবচেয়ে পছন্দের সংস্করণের বিশ্বকাপ হওয়ায় সেমিফাইনাল খেলার স্বপ্নে বিভোর ছিলেন ক্রিকেটার থেকে সমর্থক কিংবা বোর্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা। অথচ বাংলাদেশ বিশ্বকাপ শেষ করেছিল শুধু মাত্র দুই জয়ে। সাকিব আল হাসান তকমা দিয়েছেন নিজেদের ইতিহাসের সবচেয়ে বাজে বিশ্বকাপ হিসেবে।
কয়েক মাসের ব্যবধানে আরও একটি বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়ার পথে বাংলাদেশ। আগামী জুনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং যুক্তরাষ্ট্রে হতে যাওয়া বিশ্বকাপ খেলার বিমান ধরার আগে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে নিজেদের প্রত্যাশা, প্রস্তুতি এসব নিয়ে কথা বলেছেন চান্ডিকা হাথুরুসিংহে। প্রধান কোচ জানান, তার প্রথম লক্ষ্য গ্রুপ পর্ব পেরিয়ে যাওয়া। যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা, সাউথ আফ্রিকা, নেদারল্যান্ডস এবং নেপাল।
এ প্রসঙ্গে হাথুরুসিংহে বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের প্রত্যাশা অনেক বেশি। কারণ আইসিসি ইভেন্টে আমরা ভালো পারফরম্যান্স করি। আমাদেরও প্রত্যাশা কম নয়। আমরা কোচ খেলোয়াড়রাও আশাবাদী। আমরা বিশ্বকাপে খুব কঠিন একটা গ্রুপে আছি। আপাতত গ্রুপ পর্ব উতরে যাওয়া মূল লক্ষ্য।’
অতীতের চেয়ে ভালো করার সম্ভাবনা নিয়ে হাথুরুসিংহে জানান, তারা সম্ভাব্য সব প্রস্তুতিই নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক টুর্নামেন্টই ভালো করার সুযোগ। আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং হচ্ছে। তবে অতীতের চেয়ে ভালো করার জন্য সম্ভাব্য সব প্রস্তুতিই আমরা নিচ্ছি।’
বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়ার আগে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ। ৪-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতলেও মানুষের মন ভরাতে পারেননি নাজমুল হোসেন শান্ত-লিটন দাসরা। বরং টি-টোয়েন্টি মেজাজে খেলতে না পারায় সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে হাথুরুসিংহের শিষ্যদের। কদিন আগে সাকিব জানিয়েছিলেন, জিম্বাবুয়ে কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে খেলে বিশ্বকাপের চিন্তা করা নেয়া ভুল ধারণা।
সাকিবের মন্তব্যের সঙ্গে অবশ্য একমত হতে পারেননি হাথুরুসিংহে। বাংলাদেশের প্রধান কোচ বলেন, ‘আমি এমনটা মনে করি না। আমার কাছে ম্যাচ খেলা মানেই ভালো প্রস্তুতি। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে যেকোনো ম্যাচ কঠিন হয়ে উঠতে পারে। শক্তিমত্তায় পার্থক্য থাকতেই পারে, তবে আমি মনে করি প্রস্তুতি বেশ ভালো হয়েছে।’
কয়েক জনের ফর্ম নিয়ে দুশ্চিতা থাকলেও বিশ্বকাপের প্রস্তুতিতে খুশি বাংলাদেশের প্রধান কোচ। হাথুরুসিংহে বলেন, ‘আমার মতে আমাদের প্রস্তুতি বেশ ভালো। চট্টগ্রামে ক্যাম্প করেছি, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পাঁচটি ম্যাচ খেলেছি, প্রায় সবাইকে খেলার সুযোগ দিতে পেরেছি। কয়েকজনের ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স নিয়ে একটু দুশ্চিন্তা আছে। তবে সব মিলে দলের প্রস্তুতিতে আমি খুশি।’
বিশ্বকাপে খেলতে নামার আগে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। এরপর ভারতের বিপক্ষে একটি প্রস্তুতি ম্যাচও খেলবেন শান্ত-সাকিবরা। ফ্লোরিডা ছাড়া এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের অন্য কোন ভেন্যুতে খেলার ।অভিজ্ঞতা না থাকায় আপাতত কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেয়াকে জরুরী মনে করছেন হাথুরুসিংহে। যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে বেশ কয়েকজন ক্রিকেটারকে বিশ্রাম দেয়ার ভাবনা থাকলেও মনোযোগ দিতে চান কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে।
হাথুরুসিংহে বলেন, ‘কন্ডিশনে মানিয়ে নেওয়া বেশ গুরুত্বপূর্ণ কারণ আমরা অ্যামেরিকায় বোধহয় আগে ম্যাচ খেলিনি। যুক্তরাষ্ট্রে খেলা সবার জন্য নতুন অভিজ্ঞতা। ওই কন্ডিশন, আবহাওয়ায় মানিয়ে নেওয়া, ভিন্ন টাইম জোন, এগুলো মানিয়ে নেওয়া জরুরী। আমরা সব ম্যাচই জিততে চাই। মূল খেলোয়াড়দের বিশ্রাম দিতে হবে, ওয়ার্ক লোডের কথা মাথায় রাখতে হবে। শারীরিক ও মানসিক বিশ্রামের পাশাপাশি কন্ডিশন মানিয়ে নেওয়ার দিকেই মূল মনোযোগ থাকবে।’