|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
ওয়াসি সিদ্দিকীর অফ স্টাম্পের বাইরের ফুলার লেংথ ডেলিভারিতে সুযোগটা মিস করতে চাইলেন না আরিফুল হক। সীমানার কাছে ফিল্ডার থাকার পরও লং অফের উপর দিয়ে ছক্কা মারলেন ডানহাতি এই ব্যাটার। রংপুর বিভাগের ব্যাটিং ব্যর্থতার দিনে একপ্রান্ত আগলে রেখে ১৬২ বলে তুলে নিলেন সেঞ্চুরি। আরিফুল একাই যেখানে ১০৩ রান করলেন সেখানে রংপুরের বাকি ১০ ব্যাটার মিলে করতে পেরেছেন মাত্র ৮৬ রান। রংপুরকে ১৮৯ রানে গুঁড়িয়ে দেয়ার দিনে রাজশাহী বিভাগের হয়ে বোলিংয়ে নায়ক সাব্বির হোসেন। দারুণ বোলিংয়ে ডানহাতি মিডিয়াম পেসার নিয়েছেন ৪৭ রানে ৬ উইকেট।
রাজশাহীর শহীদ কামারুজ্জামান স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুটা ভালো করতে পারেনি রংপুর। ইনিংসের সপ্তম ওভারে নিজেদের প্রথম উইকেট হারায় সফরকারীরা। ওয়ালিদের অফ স্টাম্পের অনেকটা বাইরের ফুলার লেংথ ডেলিভারিতে ড্রাইভ করতে গিয়ে গালিতে থাকা হাবিবুর রহমান সোহানকে ক্যাচ দিয়েছেন মীম মোসাদ্দেক। ডানহাতি ব্যাটার ফিরেছেন ৭ রানে। পরের ওভারে আউট হয়েছেন আরেক ওপেনার চৌধুরি মোহাম্মদ রিজওয়ান।
মোহর শেখের অফ স্টাম্পে পড়ে বেরিয়ে যাওয়া ডেলিভারিতে আউট সাইড এজ হয়ে দ্বিতীয় স্লিপে থাকা সাব্বিরকে ক্যাচ দিয়েছেন। তরুণ ওপেনারের ব্যাট থেকে এসেছে ৯ রান। তিনে নেমে সুবিধা করতে পারেননি আব্দুল্লাহ আল মামুনও। বেশ খানিকটা সময় উইকেটে টিকে থাকলেও ২৭ বল খেলা বাঁহাতি এই ব্যাটার করতে পেরেছেন মাত্র ১ রান। সাব্বিরের অফ স্টাম্পের অনেকটা বাইরের ডেলিভারিতে উড়িয়ে মারতে গিয়ে উইকেটের পেছনে থাকা প্রীতম কুমারকে ক্যাচ দিয়েছেন।জুটি গড়ে রংপুরকে এগিয়ে নিতে পারেননি আকবর আলীও।
রংপুরের অধিনায়ক ফিরেছেন মাত্র ১২ রানে। সাব্বিরের বলে কাট করে চার মারার পরের বলে গালিতে থাকা ওয়াসিকে ক্যাচ দিয়েছেন। পরের বলে আউট হয়েছেন তানবীর হায়দার। ডানহাতি মিডিয়াম পেসারের বাউন্সারে প্রীতমকে ক্যাচ দিয়েছেন। অভিজ্ঞ তানবীরকে ফিরতে হয় গোল্ডেন ডাক মেরে। মাত্র ৩৮ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে রংপুর। সফরকারীদের সেখান থেকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন নাইম ইসলাম ও আরিফুল। তারা দুজনে মিলে যোগ করেন ৫৯ রান। নাইমের বিদায়ে ভাঙে তাদের জমে ওঠা জুটি।
সাব্বিরের বলে লেগ বিফোর উইকেট হয়েছেন ২৮ রান করা নাইম। যদিও আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট ছিলেন না অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। দলের রান একশ হওয়ার আগে ফিরেছেন নবিন ইসলামও। নিহাদ উজ জামানের হাতে ক্যাচ বানিয়ে তাকেও ফিরিয়েছেন সাব্বির। একটু পর সাজঘরের পথে হেঁটেছেন রবিউল হকও। নিজের ষষ্ঠ উইকেট হিসেবে ১ রান করা রবিউলকে আউট করেন ডানহাতি মিডিয়াম পেসার। ১০৯ রানে ৮ উইকেট হারানোর পর রংপুরকে পুরোটা সময় টেনেছেন আরিফুল।
তাকে সঙ্গ দেয়ার চেষ্টা করেছেন আব্দুল গাফফার সাকলাইন ও আবু হাসিম। ৭২ বলে হাফ সেঞ্চুরি পাওয়ার পর দ্রুত রান তোলায় মনোযোগ দেন আরিফুল। তাতে পেয়েছেন সেঞ্চুরির দেখাও। ১০৩ রানের ইনিংস খেলে নিজে অপরাজিত থাকলেও আরেক প্রান্তে থাকা হাসিম নিজের উইকেট দিয়েছেন ওয়াসিকে। ব্যাটারদের ব্যর্থতায় প্রথম ইনিংসে তাই ১৮৯ রানে অল আউট হতে হয়েছে রংপুরকে। রাজশাহীর হয়ে সাব্বির ৬টি এবং একটি করে উইকেট নিয়েছেন ওয়ালিদ, মোহর এবং ওয়াসি।
শেষ বিকেলে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং করতে নেমে নামে রাজশাহী। স্বাগতিদের শুরুটাও হয়নি প্রত্যাশিতভাবে। ইনিংসের পঞ্চম ওভারের শেষ বলে আব্দুল গাফফারকে নিজের উইকেট নিয়েছেন মিজানুর রহমান। লেগ বিফোর হয়ে ফেরা অভিজ্ঞ ব্যাটার করেছেন মাত্র ৫ রান। পরবর্তীতে রাজশাহীকে আর কোন উইকেট হারাতে দেননি হাবিবুর ও সাব্বির। রংপুরের চেয়ে ১৫০ পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় দিন ব্যাটিংয়ে নামবেন ১২ রান করা হাবিবুর ও ১৭ রান করা সাব্বির।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
রংপুর (প্রথম ইনিংস)- ১৮৯/১০ (৬৩.৪ ওভার) (আরিফুল ১০৩*, নাইম ২৮, আব্দুল গাফফার ১৬; সাব্বির ৬/৪৭)
রাজশাহী (প্রথম ইনিংস)- ৩৯/১ (১৬ ওভার) (সাব্বির ১৭*, হাবিবুর ১২*; গাফফার ১/১৫)