|| ক্রিকফ্রেঞ্জি করেসপন্ডেন্ট ||
সেমিফাইনালে ডেল স্টেইনের বিপক্ষে সেই ম্যাচ জেতানো ছক্কায় নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেটে স্মরণীয় হয়ে আছেন গ্র্যান্ট এলিয়ট। সাউথ আফ্রিকা ছেড়ে নিউজিল্যান্ডে পাড়ি জমানো এলিয়ট ক্রিকেট ছেড়েছেন অনেক আগেই। বর্তমানে কাজ করছেন ধারাভাষ্যকার হিসেবে। নিউজিল্যান্ডের ঘরোয়াতে প্রায়ই ধারাভাষ্য দিতে দেখা যায় তাকে। বাংলাদেশের ঐতিহাসিক মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্ট জয়ের দিনে ধারাভাষ্য কক্ষে ছিলেন সাবেক এই ক্রিকেটার।
বর্তমানে ধারাভাষ্য দিচ্ছেন বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে। দেশে ফিরেও ব্যস্ত সময় পার করতে হবে তাকে। নিজের নতুন পেশায় কাজের ফাঁকে একান্ত সাক্ষাৎকারে কথা বলেছেন ক্রিকফ্রেঞ্জির মমিনুল ইসলাম’র সঙ্গে। শুনিয়েছেন বাংলাদেশে আসার অভিজ্ঞতা, বিপিএলের গল্প, বাতলে দিয়েছেন দেশের বাইরে বাংলাদেশের উন্নতির পথও।
ক্রিকফ্রেঞ্জি: ধারাভাষ্যকার হিসেবে বাংলাদেশে এসেছে, কেমন উপভোগ করছেন?
গ্র্যান্ট এলিয়ট: হ্যাঁ, বেশ ভালো লাগছে। খেলা দেখার জন্য মাঠের সেরা সিট পাচ্ছি, তাই না? আমি সবসময় খেলার সাথে যুক্ত থাকতে চেয়েছি। আমার মনে হয় ২০ বছর ক্রিকেট খেলার পর এটাকে ছাড়ার সুযোগ নেই। আমি ১৬ বছর বয়স থেকে পেশাদার ক্রিকেট খেলেছি। একটা সময় খেলাটা শেষ করতে হয়। আমি এখনও খেলাটাকে ভালোবাসি, এটার সঙ্গে থাকতে ভালো লাগে। আপনাকে যেটা বললাম মাঠের সেরা সিটে বসে অন্যদের সঙ্গে ধারাভাষ্য দিচ্ছি। আমি এইচডি অ্যাকারম্যানের বিপক্ষে খেলেছি। এখন তার সঙ্গে এখানে আবারও বন্ধুত্ব করার সুযোগ হচ্ছে। এটা দারুণ ব্যাপার।
ক্রিকফ্রেঞ্জি: তবে কি ধারাভাষ্যকে পুরোদমে পেশা হিসেবে নিচ্ছেন?
এলিয়ট: আমার মনে হয় এটা এমন একটা জিনিস যা করতে পারলে আপনি বড়ই ভাগ্যবান। গ্রীষ্মের সময়টায় আমি নিউজিল্যান্ডে ধারাভাষ্য দেব। সামনে ঘরোয়া ক্রিকেট আছে, সেখানেও কাজ করব। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও ধারাভাষ্য দেব, ধরুন কিছু টেস্ট ম্যাচে ধারাভাষ্য দিলাম। দেখতে হবে এটি আমাকে শেষ পর্যন্ত কোথায় নিয়ে যায়। কারণ এটা করলে আপনাকে বাড়ির বাইরে থাকতে হবে, অনেকটা ভ্রমণ করতে হবে। তবে আমি খেলার সাথে যুক্ত থাকতে চাই।
ক্রিকফ্রেঞ্জি: বাংলাদেশে তো এর আগেও এসেছেন, এবার এলেন তবে ভিন্ন পরিচয়ে। সময়টা কেমন কাটছে?
এলিয়ট: সময়টা বেশ ভালো কাটছে। বাংলাদেশের খাবারগুলো একটু বেশি মশলাযুক্ত। এ দেশের খাবার আমার বেশ ভালো লাগে। আপনি বিশ্বের যেখানেই যান না কেন ভিন্ন কিছুর চেষ্টা করাটা দারুণ ব্যাপার। বাংলাদেশে আমি বেশ কয়েকবারই এসেছি। ওয়ানডে সিরিজ খেলতে এসেছিলাম, টেস্টের জন্য এসেছিলাম। মাঝে বিপিএলও খেলতে এসেছিলাম, এবার আবার এলাম। চার কিংবা পাঁচবার বাংলাদেশে আসায় এটার সঙ্গে খানিকটা মানিয়ে নিয়েছি। আমার মনে হয় এখানকার মানুষ খুবই ভালো। তারা সবার সঙ্গে বন্ধুসূলভ আচরণ করে।
ক্রিকফ্রেঞ্জি: সাংবাদিকদের সঙ্গে ক্রিকেট খেললেন, চা বাগানেও ঘুরতে গেলেন। দারুণ অভিজ্ঞতা নিশ্চই?
এলিয়ট: সাংবাদিকদের সঙ্গে ক্রিকেট খেলাটা দারুণ অভিজ্ঞতা ছিল। যদিও সেটা টেপ টেনিস বলে খেলা। আমার মনে হয়েছে আমি বেশ ছন্দে আছি। ভালো খেলছিলাম, কয়েকটা স্ট্রেইট ড্রাইভ খেলেছিলাম, বলও ব্যাটে লাগছিল ঠিকঠাক। খেলা শেষেই চা বাগান দেখতে বেরিয়েছিলাম। চা বাগানটা সুন্দর ছিল, চারপাশ খানিকটা চুপচাপ। আতহার আলী খানের সঙ্গে যেতে পারে ভালো লেগেছে। চা বাগান নিয়ে তার সঙ্গে আলাপও হয়েছে। সে আমার জন্য আইসক্রিম এনেছিল। ধারাভাষ্য থেকে কিছুটা বিরতি পেয়ে ভালো লেগেছে। এমনকি এইচডি অ্যাকারম্যান ভাবেনি আমরা বিরতি পাব।
ক্রিকফ্রেঞ্জি: বিপিএলের কথা বলছিলেন, আপনি বিপিএলে খেলেছেন। বাংলাদেশের লিগে খেলার অভিজ্ঞতাটা কেমন?
এলিয়ট: হ্যাঁ, চিটাগং ভাইকিংসের হয়ে বিপিএল খেলেছিলাম। আমার জন্য দারুণ একটা অভিজ্ঞতা ছিল। আমার মনে হয় এখানকার সমর্থকরা তাদের দলকে বেশ সমর্থন করে। সেবার আমাদের দলে ক্রিস গেইল, টাইমাল মিলসদের মতো ক্রিকেটার ছিল। আমরা দারুণ একটা দল ছিলাম। বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করতে আমার ভালো লাগে। বিপিএলে এসে এমন অভিজ্ঞতা পেয়েছিলাম।
ক্রিকফ্রেঞ্জি: আপনি যখন খেলেছেন তখন এত বেশি লিগ ছিল না। এখন ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের ছড়াছড়ি। তাদের সঙ্গে তুলনা করলে বিপিএলের অবস্থান এখন কোথায় বলে মনে হয়...
এলিয়ট: আমার মনে হয় বেশিরভাগ লিগ একই রকম। ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে পার্থক্যটা মনে হয় কন্ডিশনের। কারণ একই খেলোয়াড় রোটেট করে বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি দলে খেলছে। এটা আসলে একটা সংস্কৃতি, যা আপনি খেলোয়াড়দের কাছ থেকে সমর্থন পান। আমার মনে হয় এটা ক্রিকেটের বাইরের বিষয়। ক্রিকেটার হলে আপনি এটা নিয়ে রোমাঞ্চিত হবেন। কিন্তু তুলনা করতে গেলে সব লিগ প্রায় একই। তবে এখানকার কন্ডিশন একটু আলাদা। কারণ এখানে টার্নিং উইকেটে বেশি খেলা হয়। অনেক সময় ডান, বাম কম্বিনেশনের হিসেবও মেলাতে হয়। আমার মনে হয় বিপিএলের দল সাজানো একটু অন্যরকম।
ক্রিকফ্রেঞ্জি: টি-টোয়েন্টিতে তো পাওয়ার হিটারদের গুরুত্ব অনেক বেশি। বাংলাদেশের তেমন পাওয়ার হিটার নেই বললেই চলে। এখানে বাংলাদেশ কিভাবে উন্নতি করতে পারে...
এলিয়ট: আমার মনে হয় এটাতে উন্নতি করতে চাইলে বিপিএল সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখবে। দেখুন, এখানে ক্রিস গেইলের মতো আন্তর্জাতিক মানের ক্রিকেটার আসে। আপনি যদি হঠাৎ তার সঙ্গে তার দলে খেলেন, তাহলে আপনি তাদের কাছ থেকে শেখার সুযোগ পাবেন। চাইলে আপনি তাদের কাছ থেকে শিখতে পারেন। শুধু গেইল না, এখানে আরও অনেক বিদেশি এবং ভালো মানের ক্রিকেটার আসে। এমনটা আইপিএলেও দেখা যায়।
এটা ভারতের ক্রিকেটকে এগিয়ে দিয়েছে। কারণ বিশ্বের অন্য প্রান্ত থেকে যেসব ক্রিকেটার আসে তাদের কাছে থেকে তারা শেখে। আমার কথাই ধরুন না, আমরা যখন এখানে আসি তখন বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের কাছ থেকে শিখি। তাদের কাছে আমরা প্রায়শই জানতে চাই, তারা কিভাবে স্পিন খেলে, তারা কিভাবে সবকিছু করে। এটা করলে একজনের কাছ থেকে অন্যজনের কাছে জ্ঞান স্থানান্তরিত হয়। ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে এটাই বড় সম্পদ হতে পারে।
ক্রিকফ্রেঞ্জি: আপনি বলছিলেন যখন বাংলাদেশে আসেন তখন এখানকার ক্রিকেটারদের কাছ থেকে কন্ডিশন সম্পর্কে ধারণা নেন। নির্দিষ্ট করে কারও কথা বলবেন?
এলিয়ট: হ্যাঁ, আমি তামিম ইকবালের কথা বলতে পারি। আমি যখন ওয়েলিংটনের হয়ে খেলতাম তখন তামিমের সঙ্গে কথা বলতাম। সেই সময় নিউজিল্যান্ডে তামিম আমার দলের হয়ে খেলতো। তামিম দারুণ একজন মানুষ। সাউথ আফ্রিকাতেও আমার বন্ধু আছে। আমি যখন ইংল্যান্ডে যাই তখন সেখানকার ক্রিকেটারদের সঙ্গে আলাপ করি। তাদের কাছে জানতে চাই এই কন্ডিশনে তারা কিভাবে খেলে। দেখুন, আপনি যখন কন্ডিশন সম্পর্কে ধারণা পাবেন তখন এটা আপনাকে সহায়তা করবে। আপনার উন্নতি করতে ভূমিকা রাখবে।
ক্রিকফ্রেঞ্জি: ওয়েলিংটনে তামিমের অধিনায়ক ছিলেন। এ ছাড়া তার বিপক্ষেও তো খেলেছেন...
এলিয়ট: হ্যাঁ, সে ওয়েলিংটনের হয়ে খেলেছিল। এ ছাড়া আমরা অনেকবারই একে অন্যের বিপক্ষে খেলেছি। দেখুন, যখন কেউ এসে আপনার দলের জন্য খেলবে তখন সে আপনার পরিবারের অংশ। এটা ভুলে গেলে চলবে না। আগে থেকেই আমি তার খেলা দেখছি। তার দারুণ একটা ক্রিকেট ক্যারিয়ার আছে। সে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার। তাকে ব্যাটিং করতে দেখতে ভালো লাগে। জানেন, আমার আর তামিমের কোচও একজন ছিল, জেমি সিডন্স। তার কাছ থেকে শেখায় আমরা একই ধরনের কিছু জিনিস আয়ত্ত্ব করেছিলাম।
ক্রিকফ্রেঞ্জি: আপনি তো জানার কথা বাংলাদেশের উইকেটগুলো একটু স্পিন নির্ভর। দ্বিপাক্ষিক সিরিজে ভালো করলেও আইসিসির টুর্নামেন্টে সেভাবে কিছুই করতে পারে। বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে ভালো করতে এমন উইকেটে খেলার প্রবণতা কমানো উচিত কিনা?
এলিয়ট: আমার মনে হয় বাংলাদেশ সত্যিই এখানে উন্নতি করতে পারে। সিম এবং বাউন্স থাকে এমন উইকেট বানানো উচিত। এটা এমন একটা জিনিস যা বোর্ডের ভাবতে হবে। এই কন্ডিশনে যদিও এটা একটু কঠিন। আপনি নিউজিল্যান্ডে দেখুন, আমরা সবুজ উইকেট বানাই। আমাদের ওইখানে কখনও কখনও দেখবেন একাদশে স্পিনার নেই। উইকেটে সিম আর সুইং থাকায় আমরা চারজন করে পেসার খেলাই। ঘরের মাঠে আমরা এভাবে জিতি। আমরা যখন এখানে আসি তখন আমরা হেরে যাই। কারণ এখানে বল প্রচুর ঘুরে। আমাদের আসলে এটার সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের রোমাঞ্চকর বিষয় হচ্ছে আপনি যেখানেই যান না কেন কন্ডিশন ভিন্ন। দল হিসেবে আপনি কিভাবে মানিয়ে নিচ্ছেন এটাই দেখার বিষয়। আমার মনে হয় বাংলাদেশ বাইরে গিয়ে বেশি বেশি খেলে এটার সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে। আবার আপনার এমন কোচিং ব্যক্তিত্ব লাগবে যে জানে ওই কন্ডিশনে সফল হতে হলে কি করতে হবে। আরও একটা ব্যাপার, বাংলাদেশের ব্যাটাররা খুব বেশি বল খেলে। আপনি দেখুন, এখানে কেউ খুব বেশি বল ছাড়তে চায় না। বাউন্স নেই বলেই হয়ত বল ছাড়ছে না। হঠাৎ করে নিউজিল্যান্ডে গিয়ে দেখবেন বাউন্সে বল ছাড়ছে।
বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের ক্ষেত্রে কি হয় তারা বলটি ছেড়ে না দিয়ে খেলে এবং এজ হয়। এটা থেকে বেরিয়ে আসতে সময় লাগবে। ব্যাটাররা সেখানে যত বেশি খেলবে ততই শিখতে পারবে। নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেটারদের সঙ্গেও এমন হয়। এখানে অনেকেই আছে যারা বাংলাদেশে এর আগে আসেনি। তারা নিশ্চিতভাবে এখান থেকে শিখবে। আপনাকে এটা নিশ্চিত করতে হবে আপনি যখন পরেরবার আসবেন তখন যেন আপনার মাথা কম্পিউটারের মতো কাজ করে। এটা আপনাকে আরও বেশি অভিজ্ঞ করে তুলবে।
ক্রিকফ্রেঞ্জি: মাশরাফি এখন খেলছেন না, সাকিব, মুশি, রিয়াদ, তামিমও হয়ত খুব বেশিদিন খেলবে না। এরপর নতুন একটা দল আসবে। যখন কোনো দলের এমন ট্রানজিশন পিরিয়ডের মাঝে দিয়ে যায় তখন সেটা তাদের জন্য কতটা কঠিন?
এলিয়ট: সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে সিনিয়র ক্রিকেটারদেরকে তরুণদের পাশে রাখতে হবে এবং সহায়তা করতে হবে। আপনাকে আসলে সিনিয়রদের সাথে রেখেই তরুণদের তৈরি করতে হবে। তাদের যে ধরনের অভিজ্ঞতা প্রয়োজন সেটা দিতে হবে। আপনার বয়স যদি ৪০ বছর হয় তাহলে আপনার মাথাও তেমনই হতে হবে। এই দলটায় যেমন মুশফিকুর রহিম আছে। তাকেই তরুণদের সহায়তা করতে হবে। তাদেরকে আপনার বলতে হবে কি করা উচিত, তারা কিভাবে ভিন্ন উপায়ে খেলতে পারে। তাদের সঙ্গে আলাপ করে জানতে হবে তারা আসলে কি ভাবছে। আলোচনা করলে এটা তরুণদের উন্নতিতে সহায়তা করবে। আপনার যখন এমন সিনিয়র ক্রিকেটার থাকবে তখন তাদের কাজে লাগাতে হবে।
আপনি নিউজিল্যান্ডের দিকে তাকান, আমরা ভাগ্যবান আমাদের দলে কেন উইলিয়ামসনের মতো একজন আছে। সে এমন একজন যে কিনা যারা দলে আসে তাদের সবসময় সহায়তা করে। আপনি রাচিন রবীন্দ্রর কথাই ধরুন না। তার যদি ব্যাটিংয়ে সমস্যা হয় তাহলে সে সরাসরি কেনের (উইলিয়ামসন) কাছে গিয়ে কথা বলতে পারে। এভাবেই আসলে তরুণদের উন্নতি হয়। সবসময় এমন তা না। আপনি খেলা কতটা বুঝছেন, আপনার শক্তি ও দূর্বলতা সম্পর্কে বুঝতে পারছেন এটাও ভূমিকা রাখে। তরুণদের গড়ে তুলতে দলের মাঝে সিনিয়র ও জুনিয়রদের এমন জুটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
ক্রিকফ্রেঞ্জি: ২০১০ সালে বাংলাদেশের কাছে নিউজিল্যান্ড ৪-০ ব্যবধানে হেরেছিল। আপনিও সেই দলের সদস্য ছিলেন। সেই সফরের কথা মনে আছে নিশ্চই?
এলিয়ট: হ্যাঁ, মনে আছে। আমরা সবসময় বাংলাদেশে আসতাম এবং হেরে যেতাম। এখানকার কন্ডিশন নিউজিল্যান্ডের থেকে একেবারে ভিন্ন। এখানে এসে আমাদের কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করতে হতো। এটাই আসলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। এসব অভিজ্ঞতা আপনাকে দিনকে দিন আরও ভালো বানাবে। নিজেদের কন্ডিশনে বাংলাদেশ খুবই ভালো দল। বাংলাদেশ এমনিতেও ভালো দল।
ক্রিকফ্রেঞ্জি: ১৩ বছর আগের আর এখানকার খেলা যদি বিবেচনা করেন তাহলে বাংলাদেশ কতটা বদলেছে?
এলিয়ট: আমার মনে হয় বাংলাদেশ এখনও দেশের বাইরে খেলতে গিয়ে ভুগছে। এটা এমন একটা জায়গা যেখানে অভিজ্ঞতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তরুণ ক্রিকেটাররা কি সাকিব, মুশফিক এবং তামিম ইকবালদের মতো অভিজ্ঞদের কাছ থেকে শিখছে? যারা কিনা ওয়েলিংটনে খেলেছে। আপনি দেশের বাইরে যত বেশি খেলবেন তত ভালো করবেন। আপনি যখন দেশের বাইরে গিয়ে ভালো খেলবেন তখনই আপনি আন্তর্জাতিক তারকা হবে। দেশের মাটিতেও ভালো খেলতে হবে। আমাদের ওই কন্ডিশনটা বাংলাদেশের জন্য বিদেশ। বল বাউন্স করে, সুইং করে। বাইরে যত বেশি খেলবে, তত অভিজ্ঞতা হবে এবং আপনি তত ভালো ক্রিকেটার হয়ে উঠবেন।