জাতীয় ক্রিকেট লিগ

সুমনের তাণ্ডবের দিনে বগুড়ায় ২১ উইকেটের পতন

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
প্রকাশের তারিখ: 20:00 শনিবার, 23 নভেম্বর, 2024

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||

সুমন খানের তাণ্ডবে রাজশাহী বিভাগ মাত্র ৪২ রানে অল আউট হয়ে গেছে। যা প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে বাংলাদেশের কোনো দলের সর্বনিম্ন স্কোরের রেকর্ড। এদিন হ্যাটট্রিকসহ ৭ উইকেট নিয়েছেন ঢাকা বিভাগের পেসার সুমন। এরপর ঢাকা বিভাগও ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়েছে। তারা অল আউট হয়েছে ১৮১ রানে।

এরপর নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং করতে নেমে ১ উইকেটে ১৮ রান নিয়ে প্রথম দিনের খেলা শেষ করেছে। তারা এখনও ঢাকা বিভাগের চেয়ে পিছিয়ে আছে ১২১ রানে। সাব্বির হোসেন ১ ও তানজিদ হাসান তামিম অপরাজিত আছেন ৯ রান করে। ঢাকার হয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে একমাত্র উইকেটটি পেয়েছেন মোহাম্মদ এনামুল হক।

এর আগে রাজশাহীকে গুঁড়িয়ে দিয়ে ওপেনিংয়ে বেশ ভালো শুরু করেছিল ঢাকা। জিসান আলম ও রনি তালুকদার মিলে তুলেছিলেন ৮৫ রান। এরপরই শুরু হয় ব্যাটারদের আসা যাওয়া। জিসান ফিরেছেন ৪৪ রান করে। আর রনি আউট হয়েছেন ৪০ রান করে। এরপর আশিকুর রহমানের ২৯ ও সুমনের ২৬ রান ছাড়া আর কেউই বলার মতো কিছু করতে পারেননি। রাজশাহীর হয়ে ৪টি উইকেট নেন আসাদুজ্জামান পায়েল। ৩টি উইকেট নেন মোহর শেখ। আর দুটি উইকেট পেয়েছেন শফিকুল ইসলাম। আর বাকি একটি উইকেট যায় সাব্বিরের ঝুলিতে।

এদিন বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে টস জিতে বোলিংয়ে নামা ঢাকাকে ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই উইকেট এনে দেন সুমন। ২৪ বছর বয়সী পেসারের অফ স্টাম্পের ডেলিভারিতে ড্রাইভ করেছিলেন তানজিদ। মিড অফে দাঁড়িয়ে থাকা রুবেল মিয়া একটু লাফিয়ে উঠে ক্যাচ নিতেই রানের খাতা খোলার আগেই ফিরতে হয় বাঁহাতি ওপেনারকে। একই ওভারে রহমতউল্লাহ আলীকেও ফেরান সুমন। দারুণ এক ইয়র্কারে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি।

সাব্বির ও মিজানুর রহমান প্রতিরোধ গড়ার আভাস দিলেও সেটা করতে দেননি সুমন। ঢাকার এই পেসার ফিরিয়েছেন ওপেনার সাব্বিরকে। অফ স্টাম্পের অনেকটা বাইরের ফুল ডেলিভারিতে ড্রাইভ করতে গিয়ে এজ হয়ে উইকেটের পেছনে আশিকুর রহমান শিবলির গ্লাভসে ক্যাচ দিয়েছেন ১০ রান করা রাজশাহীর ওপেনার। একই ওভারের পঞ্চম ডেলিভারিতে প্রীতম কুমারকেও ফেরান সুমন।

ডানহাতি পেসারের চতুর্থ স্টাম্পের বলে ডিফেন্স করতে গিয়ে এজ হয়ে আশিকুরের গ্লাভসে ক্যাচ দিয়েছেন। তানজিদ ও রহমতউল্লাহর মতো তাকেও সাজঘরের পথে হাঁটতে হয়েছে রানের খাতা খোলার আগেই। রাজশাহীর প্রথম চার ব্যাটারকে ফেরানো সুমনের সঙ্গে এবার উইকেট তোলায় মিশনে যোগ দেন এনামুল হক, রিপন মণ্ডল। দ্রুতই ফিরে গেছেন মিজানুর, এসএম মেহেরব হোসেন এবং শাখির হোসেন শুভ্র। ৪২ রানে ৭ উইকেট হারানো রাজশাহীকে আর কোন রান যোগ করতে দেননি সুমন।

নিজের অষ্টম ওভারে বোলিংয়ে এসে তৃতীয় বলে সানজামুলকে ফেরান ডানহাতি পেসার। অফ স্টাম্পে পড়ে বেরিয়ে যাওয়া ডেলিভারিতে ড্রাইভ করতে গিয়ে আশিকুরকে ক্যাচ দিয়েছেন। পরের বলে মোহরও ফিরেছেন উইকেটকিপারের গ্লাভসে ক্যাচ দিয়ে। পঞ্চম বলে আসাদুজ্জামানকে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে ফেলে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন সুমন। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এটি তার প্রথম হ্যাটট্রিক। এমন বোলিংয়ের দিনে ৭.৫ ওভারে ১৮ রান খরচায় ৭ উইকেট নিয়েছেন তিনি। আগের রাউন্ডে খুলনার বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন ঢাকার এই পেসার।

সুমনের এমন আগুনে বোলিংয়ের দিনে রাজশাহীর সাব্বির এবং মেহেরব কেবল দুই অঙ্ক স্পর্শ করতে পেরেছেন। ৫ ব্যাটার আউট হয়েছেন রানের খাতা খোলার আগেই। ব্যাটারদের এমন ব্যর্থতায় জাতীয় ক্রিকেট লিগের ষষ্ঠ রাউন্ডের প্রথম ইনিংসে মাত্র ৪২ রানে অল আউট হয়েছে রাজশাহী। বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এটিই দলীয় সর্বনিম্ন স্কোর। আগের সর্বনিম্ন দলীয় স্কোর ছিল বরিশাল বিভাগের। ২০২৩ সালে খুলনা বিভাগের বিপক্ষে মাত্র ৪৬ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল তারা। এ ছাড়া ২০১৪ সালে রংপুরের বিপক্ষে পঞ্চাশের আগে অল আউট হয়েছিল ঢাকা মেট্রো। সেবার তারা করতে পেরেছিল ৪৮ রান।