অ্যাশেজ সিরিজ

শুরুটা হ্যাজেলউডের, শেষটা লাবুশানের

তামজিদুর রহমান

তামজিদুর রহমান
প্রকাশের তারিখ: 01:02 শনিবার, 24 আগস্ট, 2019

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||

হেডিংলি টেস্টের দ্বিতীয় দিনের প্রায় পুরোটা সময় আধিপত্য দেখিয়েছে সফরকারী অস্ট্রেলিয়া। প্রথম ইনিংসে ১৭৯ রানে অলআউট হওয়া টিম পেইনের দল বোলিংয়ে নেমে ইংল্যান্ডকে অলআউট করে দেয় মাত্র ৬৭ রানে। ফলে অ্যাশেজের ইতিহাসে অষ্টম সর্বনিম্ন দলীয় স্কোরের রেকর্ড গড়ে জো রুটের ইংল্যান্ড। 

ইংল্যান্ডের ব্যাটিং লাইন আপে ধ্বস নামানোর মূলে ছিলেন ডানহাতি পেসার জস হ্যাজেলউড। মাত্র ৩০ রান খরচায় একাই ৫ উইকেট শিকার করেন তিনি। আর ২৩ রানে ৩ উইকেট নিয়ে আরেক পেসার প্যাট কামিন্সও তাঁকে দারুণ সঙ্গ দেন।  

এদিকে ইংল্যান্ড ৬৭ রানে অলআউট হওয়ার পর ১১২ রানে এগিয়ে থেকে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করার পর তেমন সুবিধা করতে পারেনি অস্ট্রেলিয়াও। ২৮৩ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ করলেও ১৭১ রানে ৬ উইকেট হারাতে হয়েছে তাদের। তবে ব্যাট হাতে দারুণ খেলছেন স্টিভেন স্মিথের পরিবর্তে দলে সুযোগ পাওয়া মার্নাস লাবুশানে। দিন শেষে ৫২ রানে অপরাজিত আছেন তিনি। আর তাঁর সঙ্গী জেমস প্যাটিনসনের সংগ্রহ ২ রান। 

এদিন দিনের শুরুতে অস্ট্রেলিয়ার ১৭৯ রানের জবাবে খেলতে নেমে ১০ রানের মাথায় ওপেনার জেসন রয়ের উইকেটটি হারায় ইংল্যান্ড। ৯ রান করা রয়কে ডেভিড ওয়ার্নারের হাতে ক্যাচ বানিয়ে নিজের প্রথম উইকেট শিকার করেন হ্যাজেলউড।

রয়ের বিদায়ের পরেই ধ্বস নামে ইংল্যান্ডের ব্যাটিংয়ে। অস্ট্রেলিয়ার পেসারদের তান্ডবের সামনে দুই অঙ্কের ঘরে রান করতে পেরেছেন শুধু জো ডেনলি (১২)। ইংল্যান্ডকে লজ্জায় ভাসিয়ে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করার পর ৩৬ রানের মাথায় দুই ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার এবং মার্কাস হ্যারিসের উইকেট দুটি হারিয়ে বিপদে পড়ে অস্ট্রেলিয়া।

৫২ রানে উসমান খাওয়াজাকে ফিরিয়ে সফরকারীদের বিপদ আরো বাড়িয়ে দেন পেসার ক্রিস ওকস। পরবর্তীতে চতুর্থ উইকেটে ট্রাভিস হেডের সঙ্গে ৪৫ রানের জুটি গড়েন লাবুশানে। বেন স্টোকসের বলে ৯৭ রানের সময় বোল্ড হয়ে হেড ফিরলে এই জুটি ভাঙ্গে।

এরপর পঞ্চম উইকেটে ম্যাথু ওয়েডের সঙ্গে ৬৬ রানের জুটি গড়েন লাবুশানে। একই সঙ্গে তুলে নেন নিজের তৃতীয় হাফসেঞ্চুরি। ১৬৩ রানের সময় ওয়েডকে ফিরিয়ে আবারো জুটি ভাঙেন স্টোকস। মাত্র এক রানের ব্যবধানে অধিনায়ক টিম পেইনকেও বিদায় নিতে হয়। এরপর লাবুশানে ও প্যাটিনসন মিলে বাকি দিনের খেলা শেষ করেন।  

এর আগে হেডিংলি টেস্টের প্রথম দিনটি নিজের করে নেন ইংল্যান্ডের পেসার জফরা আর্চার। ৬ উইকেট তুলে নিয়ে সফরকারী অস্ট্রেলিয়াকে আকাশ থেকে মাটিয়ে নামিয়ে এনেছেন এই পেসার। তাঁর ৬ উইকেটের দিনে অজিরা গুটিয়ে গিয়েছে মাত্র ১৭৯ রানে। ৪৫ রান খরচায় ৬ উইকেট নিয়েছেন আর্চার।

এদিন টসে জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন ইংল্যান্ডের অধিনায়ক জো রুট। তাঁর আমন্ত্রণে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুতেই ওপেনার মার্কাস হ্যারিসের উইকেট হারিয়ে বসে টিম পেইনের দল। ০ রানে জফরা আর্চারকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন এই ওপেনার।

 এরপরই ম্যাচে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় বৃষ্টি। বৃষ্টি থামার পর ব্যাটিং করতে নেমে দলীয় ২৫ রানে উজমান খাওয়াজাকে বিদায় করেন আরেক পেসার স্টুয়ার্ট ব্রড। দুই উইকেট হারানো অস্ট্রেলিয়ার হাল ধরেন ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার এবং মার্নাস ল্যাবুশেন।

এই জুটিতে দুজন মিলে যোগ করেন ১১১ রান। তাঁদের ব্যাটে ভর করে ভালোই এগুচ্ছিল অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু তখনই বোলিংয়ে এসে ম্যাচের মোড় ঘুড়িয়ে দেন আর্চার। ৬১ রানে ডেভিড ওয়ার্নারকে বিদায় করেন তিনি।

খানিক পর ট্রাভিস হেডকে ০ রানে বিদায় করেন ব্রড। এর এক রান পর ০ রানে ম্যাথিউ ওয়েডকে সাজঘরে পাঠান আর্চার। ১৩৯ রানে ৫ উইকেট হারানো অজিদের পক্ষে লড়াই চালিয়ে যান ল্যাবুশেন এবং অধিনায়ক পেইন।

তাঁদের ব্যাটে দলীয় ১৫০ পার হলেও ১৬২ রানে পেইনকে লেগ বিফরের ফাঁদে ফেলেন ওকস। এরপর বোলিংয়ে এসে জোড়া উইকেট তুলে নিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে মাটিতে নামিয়ে আনেন আর্চার। ল্যাবুশেনকে ৭৪ রানে বোল্ড করেন স্টোকস।

দলীয় ১৭৯ রানে নাথান লায়নকে বিদায় করে নিজের ষষ্ঠ উইকেট তুলে নেন আর্চার। ৪৩ রানের মাথায় ৮ উইকেট হারিয়ে অল আউট হয় অজিরা। প্রথম দিন এরপর আর ব্যাটিংয়ে নামেনি ইংল্যান্ড।

সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ

অস্ট্রেলিয়াঃ (প্রথম ইনিংস) ১৭৯/১০ (৫২.১ ওভার) (ওয়ার্নার- ৬১, লাবুশানে- ৭৪; আর্চার ৬/৪৫, ব্রড-২/৩২) 

ইংল্যান্ডঃ (প্রথম ইনিংস) ৬৭/১০ (২৭.৫ ওভার) (ডেনলি-১২, বার্নস-৯; হ্যাজেলউড-৫/৩০, কামিন্স-৩/২৩)  

অস্ট্রেলিয়াঃ (দ্বিতীয় ইনিংস) ১৭১/৬ (৫৭ ওভার) (লাবুশানে-৫৩*, ওয়েড-৩৩; স্টোকস-২/৩৩, ব্রড-২/ ৩৪)