বিশ্বকাপ ২০১৯

ক্রিকফ্রেঞ্জির বিশ্বকাপ সেরা একাদশ

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
প্রকাশের তারিখ: 23:18 মঙ্গলবার, 16 জুলাই, 2019

|| ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক ||

মহাকাব্যিক এক ফাইনাল দিয়ে পর্দা নেমেছে ২০১৯ বিশ্বকাপের। প্রথমবারের মতো শিরোপা উঠেছে ক্রিকেটের জনক দেশ ইংল্যান্ডের হাতে। বিশ্বকাপ শেষে চলছে পারফর্মেন্স বিশ্লেষণ। ১০ দলের ক্রিকেটারদের পারফর্মেন্সের ভিত্তিতে বিশ্বকাপের সেরা একাদশ ঘোষণা করছেন অনেক সাবেক ক্রিকেটারই।

ক্রিকেট নিয়ে কাজ করায় একটি একাদশ তৈরির তাগিদ অনুভব করছে ক্রিকফ্রেঞ্জিও। সেই তাগিদ থেকেই বিশ্বকাপের সেরা একাদশ তৈরির প্রচেষ্টা চালিয়েছে ক্রিকেট বিষয়ক পোর্টালটি। বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়া থেকে তিনজন করে ক্রিকেটারকে এই একাদশে জায়গা দেয়া হয়েছে।  

নিউজিল্যান্ড থেকে নেয়া হয়েছে দুজন ক্রিকেটারকে। এ ছাড়া বাংলাদেশ, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে একজন করে ক্রিকেটার নেয়া হয়েছে। বাংলাদেশের একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে একাদশে আছেন সাকিব আল হাসান। অধিনায়ক হিসেবে রাখা হয়েছে কেন উইলিয়ামনকে। এক নজরে দেখে নেয়া যাক ক্রিকফ্রেঞ্জির বিশ্বকাপ সেরা একাদশ।  

ডেভিড ওয়ার্নার (অস্ট্রেলিয়া): অজি ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার সর্বাধিক রান সংগ্রাহকের তালিকায় দুই নম্বরে আছেন। রোহিতের চেয়ে মাত্র এক রানে পিছিয়ে ছিলেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। ১০ ম্যাচে ওয়ার্নারের রান ৬৪৭। তিনটি সেঞ্চুরি এবং তিনটি হাফ সেঞ্চুরিতে এই রান করেছেন ওয়ার্নার। বাংলাদেশের বিপক্ষে এবারের বিশ্বকাপে নিজের সেরা ইনিংসটি খেলেছেন মারকুটে এই ব্যাটসম্যান। টাইগারদের বিপক্ষে ১৬৬ রানের ইনিংস খেলেন অজি এই তারকা ক্রিকেটার।  

রোহিত শর্মা (ভারত): বিশ্বকাপের সেরা ব্যাটসম্যান ছিলেন ভারতের রোহিত শর্মা। এবারের বিশ্বকাপে ৫টি সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন ডানহাতি এই ওপেনার। ৯ ম্যাচে ৬৪৮ রান করে শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রেখেছেন রোহিত। তারকা এই ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ ইনিংস ছিল ১৪০ রানের। পাকিস্তানের বিপক্ষে ১১৩ বলে ১৪টি চার ও ৩টি ছক্কায় ইনিংসটি সাজান ৩২ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান।

সাকিব আল হাসান (বাংলাদেশ): তিন নম্বরে ব্যাটিং করতে নেমে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশের বাঁহাতি ব্যাটসম্যান সাকিব আল হাসান। ৮ ম্যাচ খেলেই তিনি সংগ্রহ করেছেন ৬০৬ রান। এর মধ্যে সাতটিতেই পঞ্চাশোর্ধ ইনিংস খেলেন সাকিব। দুই সেঞ্চুরির পাশাপাশি ৫টি হাফ সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন বাংলাদেশের বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার। বিশ্বকাপ ইতিহাসের একমাত্র অলরাউন্ডার হিসেবে তিনি এক আসরে ৬০০ রান এবং ১০ উইকেট নেয়ার কীর্তি গড়েছেন।

কেন উইলিয়ামসন (নিউজিল্যান্ড): দুটি সেঞ্চুরি এবং দুটি হাফ সেঞ্চুরিতে ১০ ম্যাচে ৫৫৮ রান সংগ্রহ করেছেন করেছেন নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন।  চৌকস অধিনায়কত্ব দিয়ে দলকে ফাইনালে তুলে টুর্নামেন্ট সেরার পুরষ্কারও জিতেছেন তিনি। 

জো রুট (ইংল্যান্ড): ইংল্যান্ডের ডানহাতি ব্যাটসম্যান জো রুট ১১ ম্যাচে ৫৫৬ রান করেছেন। দুটি সেঞ্চুরি এবং তিনটি হাফ সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন তিনি। তাঁর সর্বোচ্চ ইনিংস ১০৭ রানের। ইংল্যান্ডকে শিরোপা জেতাতে প্রায় প্রতিটা ম্যাচেই ভূমিকা রেখেছেন টপ অর্ডার এই ব্যাটসম্যান।

বেন স্টোকস (ইংল্যান্ড): ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ শিরোপা ঘরে তোলার পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান রেখেছেন অলরাউন্ডার বেন স্টোকস। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে শ্বাসরুদ্ধকর ফাইনালে ব্যাট হাতে ৮৪ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছেন তিনি। সুপার ওভারেও তাঁর ব্যাট থেকে ৮ রান পেয়েছে ইংলিশরা। বিশ্বকাপে টানা তিন ম্যাচে তিনটি হাফ সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। টুর্নামেন্টে ৫টি হাফ সেঞ্চুরিরসহ ৪৬৫ রান রয়েছে তাঁর নামের পাশে। বল হাতেও দলের জন্য অবদান রেখেছেন স্টোকস। দুর্দান্ত বোলিংয়ে প্রতিপক্ষকে আটকে রাখার কাজ বেশ ভালোভাবেই পালন করেছেন স্টোকস। মাত্র ৪.৮৩ ইকোনমিতে বোলিং করে ৭ উইকেট নিয়েছেন ডানহাতি এই পেসার।

অ্যালেক্স ক্যারি (অস্ট্রেলিয়া): অস্ট্রেলিয়া দলে একমাত্র উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান হিসেবে বিশ্বকাপ খেলেছেন অ্যালেক্স ক্যারি। উইকেটের পেছনে দুর্দান্ত ছিলেন তিনি। বিশ্বকাপে ২০টি ডিসমিসাল করেছেন অজি এই উইকেটরক্ষক। যেখানে ১৮টি ক্যাচ এবং ২টি স্টাম্পিং করেছেন তিনি। ব্যাট হাতেও অস্ট্রেলিয়া দলের অন্যতম ভরসা হয়ে উঠেছিলেন ক্যারি। বেশ কয়েকটি ম্যাচে দলের হাল ধরে গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেছেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। তিনটি হাফ সেঞ্চুরিরসহ ৩৭৫ রান সংগ্রহ করেছেন ক্যারি। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৮৫ রানের ইনিংসটি ছিল তাঁর সর্বোচ্চ সংগ্রহ।

মিচেল স্টার্ক (অস্ট্রেলিয়া): পেস বোলিং বিভাগকে নেতৃত্ব দেবেন অস্ট্রেলিয়ার মিচেল স্টার্ক। বল হাতে বিশ্বকাপটি নিজের করে নিয়েছিলেন তিনি। এক আসরে সবচেয়ে বেশি (২৭ উইকেট) উইকেট শিকারের কীর্তি গড়ে স্বদেশি কিংবদন্তি গ্লেন ম্যাকগ্রাকে ছাড়িয়ে গেছেন বাঁহাতি এই পেসার। বিশ্বকাপের এক আসরে ২৬ উইকেট নিয়ে সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকারের রেকর্ডটি এতদিন নিজের দখলে রেখেছিলেন ম্যাকগ্রা। ১০ ম্যাচে ৫.৪৩ ইকোনমি রেটে ২৭ উইকেট নিয়েছেন স্টার্ক। বিশ্বকাপে তাঁর সেরা বোলিং ফিগার ৫/২৬।

জফরা আর্চার (ইংল্যান্ড): স্টার্কের সঙ্গে পেস আক্রমণে জুটি বাঁধবেন ইংল্যান্ডের জফরা আর্চার। ইংলিশদের বিশ্বকাপের প্রাথমিক স্কোয়াডেও উপেক্ষিত থাকা এই পেসার ১১ ম্যাচে ৪.৫৭ ইকোনমি রেটে নিয়েছেন ২০ উইকেট। বিশ্বকাপ ফাইনালের সুপার ওভারে স্নায়ু চাপ ধরে রেখে আর্চার যে বোলিং করেছেন, তা ক্রিকেট বিশ্বে বশে সমাদৃত হয়েছে। 

লকি ফার্গুসন (নিউজিল্যান্ড): নিউজিল্যান্ডকে ফাইনালে তুলতে ব্যাটসম্যান হিসেবে কেন উইলিয়ামসন যেমন ভূমিকা রেখেছেন, তেমনই বল হাতে সবচেয়ে বড় অবদান রেখেছেন পেসার লকি ফার্গুসন। একাদশে তৃতীয় পেসার হিসেবে অনেক কার্যকরী ছিলেন তিনি। স্টার্কের চেয়ে এক ম্যাচ কম খেলে ৪.৮৮ ইকোনমি রেটে ডানহাতি এই পেসার নিয়েছেন ২১ উইকেট। ডেথ বোলিংয়ে গতি দিয়ে প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের ঘুম হারাম করে দিয়েছিলেন তিনি।

ইমরান তাহির (দক্ষিণ আফ্রিকা): বিশ্বকাপ দিয়েই ক্রিকেট ক্যারিয়ারের ইতি টেনেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার লেগ স্পিনার ইমরান তাহির। কিন্তু অবসরে যাওয়ার আগে আরও একবার নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়েছেন তিনি। লেগ স্পিনারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল ছিলেন তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকাকে শেষ চারে নিতে না পারলেও নিজের সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করেছেন তাহির। ৯ ম্যাচে ৪.৫২ ইকোনমি রেটে ১১ উইকেট নিয়েছেন প্রোটিয়া এই স্পিনার। 

ক্রিকফ্রেঞ্জির বিশ্বকাপ সেরা একাদশঃ  

ডেভিড ওয়ার্নার, রোহিত শর্মা, সাকিব আল হাসান, কেন উইলিয়ামসন (অধিনায়ক), জো রুট, বেন স্টোকস, অ্যালেক্স ক্যারি, মিচেল স্টার্ক, জফরা আর্চার, লকি ফার্গুসন ও ইমরান তাহির।