আইপিএল ২০১৯

আইপিএল ফাইনালে মুম্বাই এর অবিশ্বাস্য জয়

আবিদ মোহাম্মদ

আবিদ মোহাম্মদ
প্রকাশের তারিখ: 00:27 সোমবার, 13 মে, 2019

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||

লাসিথ মালিঙ্গা যে বুড়ো বয়সেও ফুরিয়ে যান নি সেটার প্রমাণ দিলেন ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগের (আইপিএল) ১২তম আসরের ফাইনালে। গেল বার মুম্বাইয়ের বোলিং মেন্টর হিসেবে কাজ করলেও এই লঙ্কান এবারের আসরে ফের মাঠে নামেন খেলোয়াড় হিসেবে। ফাইনালে শেষ ওভারে ৯ রান ডিফেন্ড করার পাশাপাশি মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সকে চতুর্থ শিরোপা জিতিয়েছেন তিনি। মালিঙ্গার বোলিং নৈপুণ্যে শ্বাসরুদ্ধকর ফাইনালে চেন্নাই সুপার কিংসকে ১ রানে হারিয়েছে রোহিত শর্মার দল।

এক পর্যায় ম্যাচ চলে এসেছিল চেন্নাইয়ের হাতে। ইনিংসের ১৮তম ওভারে ক্রুনাল পান্ডিয়ার ওভারে ২০ রান নিয়ে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন অভিজ্ঞ শেন ওয়াটসন। সেখান থেকে শেষ ওভার পর্যন্ত চেন্নাইয়ের হাতে ম্যাচ থাকলেও মালিঙ্গার অবদানে ফাইনালে জয় লাভ করে মুম্বাই। 

ব্যক্তিগত ৫৫ রানে রাহুল চাহারের হাতে জীবন পাওয়া শেন ওয়াটসন ফাইনালে খেলেছেন ৫৯ বলে ৮০ রানের ইনিংস। অজি এই ব্যাটসম্যান যে বড় ম্যাচর বড় খেলোয়াড় সেটার প্রমাণ দিয়েছেন আবারও। আইপিএলের শুরুতে ব্যাট হাতে ফর্মে ছিলেন না তিনি। তারপরও তাঁকে প্রত্যেক ম্যাচে একাদশে রেখে আস্থা দেখিয়েছে চেন্নাই কর্তৃপক্ষ।

সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের বিপক্ষে ৯৬ রানের ইনিংস খেলার পর ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি এবং কোচ স্টিফেন ফ্লেমিংকে তাঁকে যথেষ্ট সুযোগ দেয়ার জন্য। এই ওয়াটসনই চেন্নাইকে দেখিয়েছেন চেন্নাইকে চতুর্থ আইপিএল শিরোপা জয়ের স্বপ্ন। দ্বিতীয় ইলেমেনেটরে দিল্লীর বিপক্ষে ৫০ রানের ইনিংস খেলার পর রবিবার ফাইনালে এমন ইনিংস খেলে প্রমাণ দিয়েছেন এখনি ফুরিয়ে যান নি তিনি।

সব মিলিয়ে মুম্বাইয়ের নাটকীয় জয়ের দিন বৃথা গিয়েছে ওয়াটসনের ইনিংসটি। ১৫০ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ওয়াটসনকে সঙ্গ দিতে পারেন নি চেন্নাইয়ের কোন ব্যাটসম্যান। দলীয় ৩৩ রানে ফাফ ডু প্লেসিস ২৬ রান করে ফেরার পর রায়না এবং রাইয়ুডু ফিরেছে ৮ এবং ১ রান করে।

একপ্রান্তে থিতু হয়ে খেলতে থাকা ওয়াটসনকে সঙ্গ দিতে পারেন নি অধিনায়ক ধোনিও। ২ রান করে রান আউটের ফাঁদে পড়ে তিনি বিদায় নিলে বাকিরাও আসা যাওয়ার মধ্যে ছিলেন। শেষ ওভারে ওয়াটসন রান আউট হলে ১ বলে ২ রান নিতে পারেন নি শার্দূল ঠাকুর। মালিঙ্গার বলে লেগ বিফরের ফাঁদে পড়েন তিনি। 

এই নিয়ে এবারের আসরে মুম্বাইয়ের বিপক্ষে ৪ বারের দেখায় ৪টিতেই হারল চেন্নাই। গেল আসরে হায়দ্রাবাদকে চারবারের দেখায় চারবারই হারিয়ে তৃতীয় শিরোপা জিতেছিল চেন্নাই। সেই ম্যাচেও চেন্নাইয়ের জয় নিশ্চিত করেছিলেন ওয়াটসন। খেলেছিলেন ১১৭ রানের অপরাজিত ইনিংস। 

মুম্বাইয়ের পক্ষে এদিন বল হাতে দুর্দান্ত ছিলেন জাস্প্রিত বুমরাহ এবং রাহুল চাহার। দুজন তাঁদের ৮ ওভার মোট রান দিয়েছেন মাত্র ২৮ যেখানে তাঁদের শিকার ৩ উইকেট। বোলারদের নৈপুণ্যেই ম্যাচে জয় তুলে নেয় রোহিত শর্মার দল।

অবশ্য মুম্বাইকে স্কোরবোর্ডে ১৪৯ রান তুলতে বড় সাহায্য করেছেন অভিজ্ঞ কাইরন পোলার্ড। ২৫ বলে ৪১ রানের ইনিংস খেলেছেন তিনি। এছাড়া কুইন্টন ডি কক ২৯ এবং ইশান কিশানের ব্যাট থেকে আসে ২৩ রান।

ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালোই হয়েছিল মুম্বাইয়ের। ৪.৫ ওভারে স্কোরবোর্ডে ৪৫ রান যোগ করলেও এই সময়েই ফিরে যান দুই ওপেনার রোহিত শর্মা এবং কুইন্টন ডি কক। সূর্যকুমার যাদব ১৫ করে এরপর ফিরে গেলে মুম্বাইকে চেপে ধরেন চেন্নাইয়ের বোলাররা।

বাকিরা আসা যাওয়ার মাঝে থাকলেও ব্যাট হাতে তান্ডব চালান পোলার্ড। ১০ বলে ১৬ রানের ইনিংস খেলেন হার্দিক পান্ডিয়া। নিচের সারির ব্যাটসম্যানরা পোলার্ডকে দারুন সঙ্গ দিলে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৪৯ রানের পুঁজি পায় মুম্বাই। ২৬ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন দিপক চাহার, ইমরান তাহিরের শিকার ২ উইকেট।

সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ 

মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স  ১৪৯/৮ (২০ ওভার) (পোলার্ড ৪১*) (চাহার ৩/২৬)

চেন্নাই সুপার কিংসঃ ১৪৮/৭ (২০ ওভার) (ওয়াটসন ৮০) (বুমরাহ ২/১৪)