ডিপিএল

অবিশ্বাস্য সৌম্য, চ্যাম্পিয়ন আবাহনী

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
প্রকাশের তারিখ: 16:46 মঙ্গলবার, 23 এপ্রিল, 2019

|| ক্রিকফ্রেঞ্জি করেসপন্ডেন্ট ||

জাতীয় দলের তারকায় ভরা আবাহনীকে পুরো আসর জুড়ে নিজেদের শতভাগ পারফর্মেন্স দিতে দেখা যায় নি। বিশেষ করে টপ অর্ডার থেকে বড় স্কোরের দেখা পাচ্ছিল না খালেদ মাহমুদ সুজনের আবাহনী। জহুরুল ইসলাম অমি টুর্নামেন্টের শুরুর দিকে আবাহনীর টপ অর্ডার টেনে নিলেও সম্পূর্ণ অচেনা ছিলেন সৌম্য সরকার। বিকেএসপিতে রূপগঞ্জের বিপক্ষে ম্যাচের আগ পর্যন্ত শিরোপার দৌড়ে পিছিয়ে ছিল প্রিমিয়ার লীগের ইতিহাসের সবচেয়ে সফল দলটি। কিন্তু মোক্ষম সময়ে সৌম্যর ব্যাট জ্বলে ওঠে, সাথে উত্থাপ ছড়ায় আবাহনীও।

বিকেএসপিতে এবারের আসরের শেষ ম্যাচে বিধ্বংসী সৌম্যর চূড়ান্ত রূপ দেখল শেখ জামালের বোলাররা। ৩১৮ রানের বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ইনিংসের ১৭ বল বাকি থাকতেই ৯ উইকেট হাতে রেখেই আবাহনীকে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে দেন সৌম্য। সুযোগ ছিল ১০ উইকেটের বড় জয় ছিনিয়ে নেয়ার। কিন্তু শেষ দিকে জয় থেকে ৬ রান দূরে থাকা অবস্থা জহুরুল আউট হন।

লিস্ট ‘এ’ ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন, ১৪৯ বলে ১৪টি চার ও ১৫টি ছক্কায় ২০০ রানের ইতিহাস গড়া ইনিংস খেলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ১৫৩ বলে অপরাজিত ২০৮ রানের অবিশ্বাস্য ইনিংস খেলে আবাহনীকে চ্যাম্পিয়ন করাতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন সৌম্য।

বলার অপেক্ষা রাখে না, সৌম্যর ২০৮ রানের ইনিংসটি বাংলাদেশের লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটের ইতিহাসের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ স্কোর। ইনিংস জুড়ে ১৬ ছক্কা হাঁকিয়েও রেকর্ড গড়েছেন তিনি। নিজের গড়া দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১১ ছক্কা রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছেন তিনি।

সৌম্যর চোখ ধাঁধানো ইনিংসে ফিকে মনে হয়েছে আরেক সেঞ্চুরিয়ান জহুরুল ইসলামের ইনিংস। এবারের ডিপিএলে তৃতীয় সেঞ্চুরি পূর্ণ করতে ১২৭ বল খরচা করেন তিনি। সর্বোচ্চ জুটির রেকর্ডও নিজেদের করে নিয়েছেন জহুরুল ও সৌম্যরা। বোলারদের কোনো সুযোগ না দিয়েই ৩১২ রান যোগ করেন প্রথম উইকেট জুটিতে। শেখ জামালের পার্টটাইম বোলার ইমতিয়াজের বলে জহুরুল আউট হলে ম্যারাথন জুটি ভাঙ্গে। শেষ পর্যন্ত সৌম্যর ছক্কার বৃষ্টির দিনে ইনিংসের ৪৭.১ ওভারে তাইজুলকে ব্যক্তিগত ১৬তম ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচ শেষ করেন সৌম্য।

এর আগে ক্যারিয়ারের সেরা ইনিংস খেলে শেখ জামালকে ৩১৭/৯  রানের পাহাড়ে পৌঁছে দেন তানবির হায়দার। টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের ভরাডুবির পর খাঁদের কিনার থেকে দলকে টেনে তোলেন তিনি। ইনিংসের ১৭তম ওভারে দলীয় ৮৫ রানের সময় উপরের সারির পাঁচ উইকেট হারিয়ে বসে শেখ জামাল।

সেখান থেকে শেখ জামালের হয়ে হাল ধরেন ইলিয়াস সানি ও তানবির হায়দার। দ্রুত অর্ধশত রানের জুটি গড়ে দলকে মান বাঁচানো স্কোরে পৌঁছে দেয় এই জুটি। ৪৬ বলে ৪৫ রান যোগ করে সানি বিদায় নিলেও ছন্দ ধরে রাখেন তানবির। এবারের ঢাকা লীগে প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে তানবিরকে ভালো সঙ্গ দেন মেহরাব হোসেন। আবাহনীর বোলারদের ঘাম ঝরিয়ে আরেকটি একশ ছুঁই ছুঁই জুটি গড়েন তানবির ও মেহরাব।

তানবির ৫৫ বলে অর্ধশত করার পর ৯৯ বলে লিস্ট ‘এ’ ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। ১০টি চার ও ২টি ছক্কায় ইনিংস সাজিয়েছেন তানবির। শেখ জামালের লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যানদের এক মুখি আক্রমণকে থামানোর দায়িত্ব নেন মাশরাফি। ৪৬তম ওভারে এসে ৩৬ বলে ৪৪ রান করা মেহরাবকে আউট করেন মাশরাফি। দ্রুত রান তুলতে থাকা তাইজুলকেও সাজঘরের পথ দেখান তিনি।

তবে শেষটা ভালো হয়নি আবাহনীর। সেঞ্চুরির পর হাত খুলে খেলে ব্যক্তিগত ও দলের স্কোর বাড়িয়ে নেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ১১৫ বলে ১৩২ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে মাঠ ছাড়েন তিনি। আবাহনীর হয়ে দিনের সেরা বোলার ছিলেন মাশরাফি, ৫৬ রানে ৪ উইকেট নিয়েছেন তিনি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

শেখ জামালঃ ৩১৭/ ৯, ওভার- ৫০

তানবির হায়দার ১৩২*, ইলিয়াস সানি ৪৫

মাশরাফি বিন মর্তুজা ৪/৫৬, সৌম্য সরকার ১/৪৭

আবাহনীঃ ৩১৯/১, ওভার- ৪৭.১

সৌম্য সরকার ২০৮*, জহরুল ইসলাম ১০০

ইমতিয়াজ হোসেন ১/১০