ক্রিকেট লিজেন্ডস

হিথ স্ট্রিকঃ জিম্বাবুয়ের সোনালি প্রজন্মের সারথী

ক্রিকফ্রেঞ্জি করেসপন্ডেন্ট

ক্রিকফ্রেঞ্জি করেসপন্ডেন্ট
প্রকাশের তারিখ: 20:34 শনিবার, 20 এপ্রিল, 2019

|| ফ্রাইডে স্পেশাল ||

জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটের সোনালী প্রজন্মের অন্যতম প্রতিনিধি ছিলেন হিথ স্ট্রিক। জিম্বাবুয়ের হয়ে টেস্ট এবং ওয়ানডে উভয় ফরম্যাটেই শতাধিক উইকেট লাভকারী 'প্রথম' ও 'একমাত্র' বোলার তিনি। সাড়ে চারশ'র বেশি (৪৫৫) আন্তর্জাতিক উইকেট নিয়ে দেশটির ইতিহাসে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি বোলারের নামটাও হিথ স্ট্রিক!

ব্যাটসম্যানের বুকে কাঁপন ধরানো তুমুল গতি, সাপের মত ফণা তোলা বাউন্স কিংবা পিলে চমকানো শরীরী আগ্রাসন; দেখতে নিপাট ভদ্রলোক স্ট্রিকের ছিল না এসবের কোনটাই। সাবেক এই ডানহাতি সিমারের শক্তির জায়গা ছিল নিখুঁত লাইন-লেন্থ, কন্ট্রোল, স্ট্যামিনা, ফিজিক্যাল এবং মেন্টাল স্ট্রেংথ।

লম্বা স্পেলে 'উইকেট টু উইকেট' এক টানা বল করে যাওয়াটা ছিল স্ট্রিকের সহজাত ক্ষমতা। বিশেষ করে লেন্থের ওপর তাঁর ছিল অবিশ্বাস্য নিয়ন্ত্রণ। নতুন বলের সিমকে কাজে লাগিয়ে যেকোন উইকেট থেকে আদায় করে নিতে পারতেন ল্যাটেরাল সিম মুভমেন্ট। তবে স্ট্রিকের সবচেয়ে বড় গুণ ছিল নিষ্ঠা, হার না মানা অদম্য মানসিকতা আর নিজের সামর্থ্যের ওপর অগাধ আত্মবিশ্বাস। যা তাঁকে এনে দিয়েছে জিম্বাবুয়ের ক্রিকেট ইতিহাসের 'অবিসংবাদিত' সেরা বোলারের মর্যাদা।

বলা যায় অভিষেকের পর থেকে জিম্বাবুয়ের বোলিং আক্রমণের নেতৃত্বটা বরাবরই ছিল স্ট্রিকের কাঁধে। অনেক ম্যাচেই তাঁকে দেখা যেছে 'লোন ওয়ারিয়রের' ভূমিকায়!

উইজডেন বলছে, “Streak was a superb bowler who carried a fragile looking bowling unit often single handedly. He had the ability to extract seam movement on the most docile of pitches.”

একটা উদাহরণ দিই। ২০০৩ সালে ব্রিস্টলে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে একটা ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়ে অলআউট হয় মাত্র ৯২ রানে। এই মামুলি পুঁজি নিয়েই সেদিন একা হাতে লড়াই করেছিলেন হিথ স্ট্রিক। দুর্দান্ত এক ওপেনিং স্পেলে মাত্র ২৫ রানের মধ্যে ফেলে দিয়েছিলেন ইংল্যান্ডের চার-চারজন টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানের উইকেট। স্ট্রিকের ৯ ওভারের স্পেলটা দাঁড়িয়েছিল এরকম, ৯-৩-২১-৪!

১৯৭৪ সালের ১৬ মার্চ, তৎকালীন রোডেশিয়ার (বর্তমান জিম্বাবুয়ে) বুলাওয়েতে জন্মগ্রহণ করেন হিথ হিলটন স্ট্রিক। ১৯৯৩ সালের ডিসেম্বরে পাকিস্তানের বিপক্ষে করাচিতে তাঁর টেস্ট অভিষেক। অভিষেকে মনে রাখার মত কিছু করতে না পারলেও (০/৭৭) স্ট্রিক নিজের জাতটা চিনিয়েছিলেন ঠিক তার পরের ম্যাচেই। রাওয়ালপিন্ডিতে দুই ইনিংস মিলিয়ে নিয়েছিলেন ৮ উইকেট (৩/৫৮ ও ৫/৫৬)। 'টু ডব্লু'র বিধ্বংসী বোলিংয়ে জয়ের খুব কাছে গিয়েও শেষ পর্যন্ত ৫২ রানে ম্যাচটা হেরে গিয়েছিল জিম্বাবুয়ে।

১৯৯৫ সালে জিম্বাবুয়ের ইতিহাসে প্রথম টেস্ট জয়টা এসেছিল পাকিস্তানের বিপক্ষে। ঐতিহাসিক হারারে টেস্টে স্বাগতিকরা জিতেছিল এক ইনিংস এবং ৬৪ রানে। অবিস্মরণীয় এই জয়ে বল হাতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন হিথ স্ট্রিক, দুই ইনিংস মিলিয়ে একাই নিয়েছিলেন ৯ উইকেট।

গ্রান্ট ফ্লাওয়ার (২০১), অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার (১৫৬) আর গাই হুইটালের (১১৩) সেঞ্চুরিতে প্রথম ইনিংসে জিম্বাবুয়ে করেছিল ৫৪৪ রান। তবে হারারে স্পোর্টস ক্লাবের ফ্লাট ট্র‍্যাকে 'শক্তিশালী' পাকিস্তানকে দু'বার অলআউট করে জয় ছিনিয়ে আনাটা ছিল সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। যা কেবল সম্ভব হয়েছিল স্ট্রিক (৬/৯০ ও ৩/১৫), ব্রেইন (১/২৭ ও ৩/৫০) আর হুইটালের (২/৪৯ ও ৩/৫৮) দুর্দান্ত বোলিংয়ের সৌজন্যে। প্রথম ইনিংসে স্ট্রিকের ৯০ রানে ৬ উইকেটের স্পেলটাই মূলত ব্যবধান গড়ে দিয়েছিল ম্যাচে।

২-১ ব্যবধানে সিরিজ হারলেও সিরিজসেরার ট্রফিটা উঠেছিল স্ট্রিকের হাতে। বিপক্ষ দলে ওয়াসিম, ওয়াকার, আকিব জাভেদের মত বোলার থাকার পরেও সিরিজের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি ছিলেন তিনিই; মাত্র ১৩.৫৪ গড়ে নিয়েছিলেন ২২ উইকেট।

মজার ব্যাপার হল, টেস্ট ক্যারিয়ারে কখনও ম্যাচসেরার পুরস্কার না জিতলেও সিরিজসেরার পুরস্কার জিতেছেন তিনবার।

• ১৯৯৫ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৫৪ রান ও ১৩.৫৪ গড়ে ২২ উইকেট
• ২০০০ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১২৮ রান ও ২০.২ গড়ে ১০ উইকেট
• ২০০১ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে ১৫৪ রান এবং ১৫.৮২ গড়ে ১১ উইকেট

দীর্ঘ এক যুগের টেস্ট ক্যারিয়ারে স্ট্রিক ম্যাচ খেলেছেন ৬৫টি। ২৮.১৪ গড়ে উইকেট পেয়েছেন ২১৬টি যা জিম্বাবুয়ের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। ম্যাচে কখনও ১০ উইকেট না পেলেও ইনিংসে ৫ উইকেট শিকার করেছেন ৭ বার।

• পাকিস্তানের বিপক্ষে ৫/৫৬, রাওয়ালপিন্ডি, ১৯৯৩
• পাকিস্তানের বিপক্ষে ৬/৯০, হারারে, ১৯৯৫
• পাকিস্তানের বিপক্ষে ৫/৭০, বুলাওয়ে, ১৯৯৫
• অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৫/৯৩, হারারে, ১৯৯৯
• ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৫/২৭, ত্রিনিদাদ, ২০০০
• ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৬/৮৭, লর্ডস, ২০০০
• ভারতের বিপক্ষে ৬/৭৩, হারারে, ২০০৫

১৯৯৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অভিষেকের পর থেকে ওয়ানডে খেলেছেন ১৮৯টি। ২৯.৮ গড়ে উইকেট নিয়েছেন ২৩৯টি; ইনিংসে পাঁচ উইকেট ১ বার আর ৪ উইকেট নিয়েছেন ৮ বার। টেস্টের মত ওয়ানডেতেও তিনি জিম্বাবুয়ের ইতিহাসে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি।

ওয়ানডেতে স্ট্রিকের ক্যারিয়ার সেরা বোলিং ভারতের বিপক্ষে ৩২ রানে ৫ উইকেট, ১৯৯৭ সালে বুলাওয়েতে। স্ট্রিক হয়েছিলেন ম্যাচসেরা আর জিম্বাবুয়ে জিতেছিল ৮ উইকেটে।

মূলত বোলার হলেও স্ট্রিকের ব্যাটের হাতও ছিল যথেষ্ট ভাল। ইতিহাসের সেরা বোলিং অলরাউন্ডারদের ছোট্ট তালিকায় স্ট্রিককেও রাখেন অনেকেই। ক্যারিয়ার জুড়ে অসংখ্য বার তিনি দলের বিপদে রুখে দাঁড়িয়েছেন ব্যাট হাতে। লোয়ার অর্ডারকে আগলে রাখার পাশাপাশি দ্রুত রান তোলার কাজেও বেশ পারদর্শী ছিলেন তিনি।

উইজডেনের ভাষায়, "Streak was an extremely capable batsman who loves to give the ball a whack over the infield. His batting added to the strength of the Zimbabwe lower middle order".

৬৫ টেস্টে ২২.৩৫ গড়ে স্ট্রিকের সংগ্রহ ১৯৯০ রান। ১টি সেঞ্চুরির সাথে হাঁকিয়েছেন ১১টি ফিফটিও। ক্যারিয়ার সেরা অপরাজিত ১২৭ রানের ইনিংসটা খেলেছেন ২০০৩ সালে হারারেতে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে।

এছাড়া ওয়ানডেতে ১৩ ফিফটিসহ ২৮.২৯ গড়ে করেছেন ২৯৪২ রান। ক্যারিয়ার সেরা অপরাজিত ৭৯ রানের ইনিংসটা এসেছিল নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে, ২০০১ সালে অকল্যান্ডের ইডেন পার্কে।

ওয়ানডেতে ব্যাটে-বলে স্ট্রিকের ক্যারিয়ার সেরা পারফরম্যান্সটা এসেছিল ২০০১ সালে সিডনিতে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মাত্র ১৩৮ রান ডিফেন্ড করে জিতেছিল জিম্বাবুয়ে। ব্যাট হাতে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৫ রানের 'ক্যাপ্টেন্স নক' খেলার পর বল হাতেও ৪ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছিলেন স্ট্রিক।

স্ট্রিকের উদ্বোধনী স্পেলটাই (৮-৪-৮-৪) ছিল ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। একে একে নিজের শিকারে পরিণত করেছিলেন ওয়াভেল হাইন্ডস (৮), রিডলি জ্যাকবস (৬), ব্রায়ান লারা (০) এবং রিকার্ডো পাওয়েলকে (০)। হিথ স্ট্রিক (৪/৮), ব্রায়ান স্ট্র‍্যাং (৩/১৫) আর গাই হুইটালের (৩/১২) বিধ্বংসী বোলিংয়ে ক্যারিবীয়রা অলআউট হয় মাত্র ৯১ রানে।

ক্রীড়া সাময়িকী উইজডেন তাদের ম্যাচ রিপোর্টে লিখেছিল, “Streak bowled with relentless accuracy with the new ball; he moved the ball just enough to beat the bat or to find the edge.”

২০০১ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হারারেতে অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারকে নিয়ে গড়েছিলেন ওয়ানডের ৭ম উইকেটে সর্বোচ্চ জুটির রেকর্ড (১৩০)। স্ট্রিক ৫৬ রান করে আউট হয়ে গেলেও ফ্লাওয়ার শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ১৪২ রানে।

হিথ স্ট্রিক বল হাতে ক্যারিয়ারের সেরা সময়টা কাটিয়েছেন ২০০১ সালে। সে বছর ওয়ানডের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি বোলারদের তালিকায় ২য় স্থানে ছিলেন তিনি। ৩১ ম্যাচে ৪২ উইকেট নিয়ে 'স্পিন জাদুকর' মুত্তিয়া মুরালিধরনের (৫৬ উইকেট) ঠিক পরেই ছিলেন হিথ স্ট্রিক।

শুধু বোলিংই নয়, ব্যাট হাতেও ছিলেন দুরন্ত ফর্মে। ৩ ফিফটিতে ৩২.৭১ গড়ে স্ট্রিকের ব্যাট থেকে এসেছিল ৫৫৬ রান। 

ওয়ানডেতে সর্বমোট ৮ বার ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেছেন হিথ স্ট্রিক।

❐ দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১০-১-২৫-৪ ও ২৯ রান, হারারে, ১৯৯৫
❐ ভারতের বিপক্ষে ৮.৫-০-৩২-৫ ও ২টি ক্যাচ, বুলাওয়ে, ১৯৯৫
❐ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১০-১-৫৩-৩ ও ২১*(১১), বুলাওয়ে, ২০০০
❐ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৮-১-৩৪-২ ও ৭৯*(৬৭), অকল্যান্ড, ২০০১
❐ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৮-৪-৮-৪ ও ৪৫(৭০), সিডনি, ২০০১
❐ নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ১০-১-৩৬-১ ও ৪৪*(২২), হারারে, ২০০৩
❐ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৯-০-৪৫-৩ ও ৬৫(৮১) , হারারে, ২০০৩
❐ বাংলাদেশের বিপক্ষে ১০-১-৩০-৪ ও ৪৫(৬২), হারারে, ২০০৪

জিম্বাবুয়ের হয়ে সর্বমোট ২১টি টেস্ট ও ৬৮টি ওয়ানডেতে নেতৃত্ব দিয়েছেন হিথ স্ট্রিক। তবে জিতেছেন মাত্র ৪টি টেস্ট এবং ১৮টি ওয়ানডেতে। ক্যাপ্টেন্সি রেকর্ড ততটা সমৃদ্ধ না হলেও তাঁর নেতৃত্বগুণ, লড়াকু মানসিকতা এবং দায়িত্ববোধ ছিল প্রশংসা পাওয়ার মত।

২০০৫ সালে খেলা ছাড়ার পর বেশ কিছুদিন ক্রিকেট থেকে দূরে ছিলেন স্ট্রিক। পরবর্তীতে অবশ্য বেছে নিয়েছেন পেশাদার কোচিং ক্যারিয়ার। ২০০৯-২০১৩ সাল পর্যন্ত জিম্বাবুয়ে ও ২০১৪-১৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের পেস বোলিং পরামর্শকের দায়িত্ব পালন করেছেন কৃতিত্বের সাথে। ২০১৭ সালে নিজ দেশ জিম্বাবুয়ের হেড কোচ এবং ২০১৮ সালে ছিলেন আইপিএলের দল কলকাতা নাইট রাইডার্সের বোলিং কোচ। বর্তমানে নিযুক্ত আছেন কাউন্টি দল সমারসেটের বোলিং কোচের ভূমিকায়।

একই ম্যাচে একসাথে খেলার জন্য সাম্প্রতিক সময়ের আলোচিত 'পিতা-পুত্র' জুটি ওয়েস্ট ইন্ডিজের শিবনারায়ন চন্দরপল ও তাঁর ছেলে ত্যাগনারায়ন চন্দরপল। তবে এই দু’জনের আগে সবশেষ কোন পিতা-পুত্র জুটির একই দলের হয়ে একই ম্যাচে খেলার ঘটনাটা ছিল ১৯৯৬ সালের এপ্রিলে। জিম্বাবুয়ের ঘরোয়া টুর্নামেন্ট 'লোগান কাপের' একটি ম্যাচে হিথ স্ট্রিক ও তাঁর ৪৬ বছর বয়সী বাবা ডেনিস স্ট্রিক খেলেছিলেন একসঙ্গে। ম্যাচটি অবশ্য হেরে গিয়েছিলেন তাঁরা।

শেষ করব একটি অন্য রকম প্রসঙ্গ দিয়ে। বুলাওয়ে শহরের অদূরেই ছিমছাম নিরিবিলি পরিবেশে অবস্থিত হিথ স্ট্রিকের খামার বাড়ি। ছয় শতাধিক গরু আর অসংখ্য গবাদিপশুর খামার বাড়িটা মূল পারিবারিক ব্যবসা হলেও এখানে পর্যটকদের থাকার জন্য রয়েছে ৩০ শয্যাবিশিষ্ট ৬টি লজ। গ্রানাইট পাথরে নির্মিত প্রতিটি লজের স্থাপত্যশৈলীই অত্যন্ত চমৎকার ও নান্দনিক।

এছাড়াও আছে বন্য প্রাণীর অভয়ারণ্য 'এনথোকোয়েনি সাফারি পার্ক'। সঙ্গে বাপ-দাদার ভিটেটাও। স্ত্রী, দুই মেয়ে হলি ও শার্লট, ছেলে হ্যারি আর বাবা-মাকে নিয়ে এখানেই থাকেন স্ট্রিক।