ডিপিএল

আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচে আবাহনীর দাপট অব্যাহত

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
প্রকাশের তারিখ: 17:15 সোমবার, 25 মার্চ, 2019

|| ক্রিকফ্রেঞ্জি করেসপন্ডেন্ট ||

মোহামেডান-আবাহনীর গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে দাপট বজায় রেখেছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন আবাহনী। মোহামেডানের দেয়া ২৪৯ রানের লক্ষ্য সহজেই তাড়া করে জিতেছে ধানমন্ডির জায়ান্টরা। ওপেনার জহুরুল ইসলাম আবাহনীর হয়ে সর্বোচ্চ ৯৬ রান করেছেন। এছাড়া আরেক ওপেনার সৌম্য সরকারের ব্যাট থেকে এসেছে ৪৩ রানের ইনিংস। দুই ওপেনারের গড়া ১০৫ রানের ওপেনিং জুটিতে ভর করেই সহজ জয়ের ভিত পেয়েছে আবাহনী।

তিন নম্বরে নামা ওয়াসিম জাফরও রানের দেখা পেয়েছেন। তবে ৪২ বলে ৩৮ রান করে শফিউলের শিকার হতে হয় তাঁকে। বাঁহাতি ব্যাটসম্যান নাজমুল ইসলাম শান্তর সামনে সুযোগ ছিল ম্যাচ শেষ করে আসার। কিন্তু চতুরাঙ্গার স্পিনে লেগ বিফরের ফাঁদে পড়েন তিনি। ১৬ বল খেলে ১৬ রান করে সাজঘরে ফিরতে হয় তাঁকে। তখনও দলের জয়ের জন্য ১০ ওভারে ৩৯ রান দরকার ছিল।  

উইকেট হারালেও তবুও পাল্লা আবাহনীর দিকেই ভারী ছিল। কিন্তু ইনিংসের ৪১তম ওভারে সেঞ্চুরির দুয়ারে দাঁড়ানো জহুরুলকে বোল্ড করে ম্যাচের আকর্ষণ ফিরিয়ে আনেন শাহাদাত। ১৩১ বল খেলে ৯৬ রান করে সাজঘরে ফিরতে হয় তাঁকে। ১২ চারে সাজানো ইনিংসের সমাপ্তি ঘটায় চাপে পড়ে আবাহনী।

পরবর্তীতে কাপ্তান মোসাদ্দেক ও সাব্বিরের জুটি আবাহনীর জয় নিশ্চিত করেন। ইনিংসের ৪৮তম ওভারে পার্ট টাইমার মজিদের অফ স্পিনে বিশাল ছক্কা হাঁকিয়ে আবাহনীকে ৬ উইকেটের জয় এনে দেন সাব্বির। মোসাদ্দেকের ব্যাট থেকে আসে অপরাজিত ২৩ বলে ১৮ রান। অন্যপ্রান্ত থাকা সাব্বির ১৯ বলে ২১ রান করেন।

মোহামেডানের হয়ে দুটি উইকেট নেন শাহাদাত হোসেন রাজিব এবং একটি করে উইকেট নেন চতুরাঙ্গা ডি সিলভা এবং শফিউল ইসলাম।

এর আগে ডিপিএলের এই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে আবাহনীর বিপক্ষে ৭ উইকেটে ২৪৮ রান করে মোহামেডান। কাপ্তান রকিবুল ও ইরফানের অর্ধশত রানে ভর করে লড়াই করার মত পুঁজি পায় মতিঝিল পাড়ার দলটি। শেষের দিকে সোহাগ গাজি ও চতুরাঙ্গা ডি সিলভা আগ্রাসী ব্যাটিং করে দলকে মাঝারি মানের স্কোর গড়তে সাহায্য করে। দুইজনের ব্যাট থেকে আসে যথাক্রমে ২৭ (২০ বল) ও ৩২ (২৪ বল) রান।

আবাহনীর হয়ে দারুণ বোলিং করেছেন বাঁহাতি স্পিনার নাজমুল ইসলাম অপু। ২৯ রান খরচায় তিন উইকেট শিকার করেছেন তিনি। ৩১ রান দিয়ে সমান সংখ্যক উইকেট নিয়েছে পেসার সাইফউদ্দিন।

হাই ভোল্টেজ ম্যাচে টসে হেরে মোহামেডানকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছিল আবাহনী। মিরপুরে সকাল বেলার উইকেটে মাশরাফি ও মিঠুনের বদলী হিসেবে একাদশে জায়গা পাওয়া সাইফউদ্দিনের বোলিংয়ের সামনে সতর্ক ব্যাটিং করেন লিটন ও মজিদ।

উইকেটের সুবিধা নিয়ে দুর্দান্ত বোলিং করে মোহামেডান ওপেনারদের চাপে রাখে মাশরাফি-সাইফউদ্দিন। ব্যাটিং পাওয়ারপ্লের ১০ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৩৬ রান তোলে মোহামেডান।

কিন্তু কঠোর পরিশ্রম করে উইকেট ছুড়ে আসে ভালো খেলতে থাকা লিটন দাস। সাইফ-মাশরাফির ঝড় সামলে বাঁহাতি স্পিনার নাজমুল ইসলাম অপুর নিরীহ বলকে ফ্লিক করতে গিয়ে শর্ট মিড উইকেটে ক্যাচ তোলেন তিনি। ১৩তম ওভারে দলীয় ৪০ রানের সময় ৩৮ বল খেলে ২৭ রান করে আউট হন লিটন।

সেখান থেকে মোহামেডানের স্কোর বাড়ানোর দায়িত্ব নেন ওপেনার মজিদ ও ইরফান সুক্কুর। আবাহনীর নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে হাত খুলে রান তুলতে পারে নি মোহামেডান। ইরফান দ্রুত রান তোলার চেষ্টা করেন। অন্য প্রান্তে ধরে রাখেন ওপেনার মজিদ। কিন্তু ইনিংসের ২৪তম ওভারে এসে খেই হারান মজিদ।

মোসাদ্দেকের অফ স্পিনে ব্যাক ফুট থেকে খেলতে নেমে লেগ বিফরের ফাঁদে পড়েন তিনি। ৬৭ বল খেলে মাত্র ৩৮ স্ট্রাইক রেটে ২৬ রান করেন তিনি। এরপর মোহামেডানের হয়ে হাল ধরলেন তিন নম্বরে ব্যাট করে নামা উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান ইরফান সুক্কুর। ৭২ বলে এবারের আসরের দ্বিতীয় অর্ধশত পূর্ণ করেন তিনি। অর্ধশত পূর্ণ করতে ৩টি চার হাঁকান ইরফান। 

তবে ইনিংস দীর্ঘ হয়নি ইরফানের। মিডেল ওভারে এসে নিজের দ্বিতীয় স্পেলে ইরফানকে বোল্ড করেন সাইফ। ৫৭ রানে থামে ইরফানের ইনিংস। তবে ছন্দ পতন হয়নি আরেক প্রান্তে থাকা কাপ্তান রকিবুলের। আগ্রাসী ব্যাটিং করে এবারের আসরের তৃতীয় অর্ধশত পূর্ণ করেন।

কিন্তু রান তাড়ার খোঁজে অপুর বলে স্কুপ করতে গিয়ে কট বিহাইন্ড হন ৫১ রান করা রকিবুল। ৪৩তম ওভারে রকিবুল বিদায় নিলেও ডেথ ওভারে গাজি ও চতুরাঙ্গা আগ্রাসী ব্যাটিং করে মোহামেডানের মান রক্ষা করে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

মোহামেডান ২৪৮/৭ (৫০ ওভার)

ইরফান ৫৭, রকিবুল ৫১

অপু ৩/২৯, সাইফ ৩/৩১

আবাহনী ২৫৪/৪ (৪৭.৩ ওভার)

জহুরুল ৯৬, সৌম্য ৪৩

শাহাদাত ৩/৫৯, চতুরাঙ্গা ১/২৭