সাক্ষাৎকার

ওয়ার্নার থেকে পেশাদারিত্ব শিখেছেন আফিফ

জুবাইর

জুবাইর
প্রকাশের তারিখ: 00:21 বুধবার, 06 ফেব্রুয়ারি, 2019

|| ক্রিকফ্রেঞ্জি করেসপন্ডেন্ট ||

নামের প্রতি সুবিচার করলেন আফিফ হোসেন ধ্রুব। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) যেই কয়জন তরুণ ক্রিকেটারের দিকে তাকিয়ে ছিল বাংলাদেশ, তাদের মধ্যে আফিফের নাম ধ্রুবতারার মতন জ্বলজ্বল করছে। আফিফের জন্য এবারের বিপিএলের পারফর্মেন্স সংখ্যায় বাঁধা যাবে না। কারণ ব্যাটিং, বোলিং কিংবা ফিল্ডিং... তিন বিভাগেই নিজের ক্রিকেটকে আরেকধাপ উঁচুতে নিয়ে গেছেন। নিজের ক্রিকেটে যোগ করেছেন পেশাদারিত্বের ছোঁয়া, যার পেছনের কৃতিত্ব অস্ট্রেলিয়ান তারকা ডেভিড ওয়ার্নারকে দিয়েছেন তিনি। ক্রিকফ্রেঞ্জির সাথে বিশেষ সাক্ষাৎকারে বিপিএল অভিজ্ঞতা ও তাঁর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।

পাঠকদের সুবিধার্থে সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরা হল...

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু গত বছরের পারফর্মেন্স নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন না, বিপিএল শুরুর আগে বিষয়টি মাথায় ছিল? 

আফিফঃ আসলে এটা আমি ওইরকম মাথায় নিয়ে রাখিনি, কিন্তু অবশ্যই ভালো করতে হবে এই চেষ্টা ছিল। ভালো হচ্ছেনা, এনসিএল খারাপ গিয়েছে হয়তো এই জন্য হয়তো বলেছিলেন। ওই জিনিসটাই চেষ্টা করেছি, যেন বিপিএলটা ভালো হয়। 

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ ওয়ার্নারের সাথে বেশ কিছু ভালো জুটি হয়েছিল আপনার, তাঁর সাথে খেলার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?

আফিফঃ আসলে আমি সবসময় যেভাবে খেলি ওইভাবেই খেলার চেষ্টা করেছি। ওয়ার্নার অনেক ভালো একজন টিমমেট। ভালো সাপোর্ট দিয়েছে বলেই আমি সুযোগটা কাজে লাগাতে পেরেছি। 

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ আপনার ব্যাটিংয়ে বেশ কিছু শট যোগ হয়েছে...

আফিফঃ বিপিএলের আগে চেষ্টা করেছিলাম হাতের শট বাড়ানোর, ওই গুলো নিয়েই কাজ করছি আর মাঠে কাজে লাগাতে পেরেছি। এই জন্যই কিছু শট বেশী খেলা হয়েছে। আসলে পাওয়ার হিটিং নিয়ে বেশী কাজ করেছি, মাঠের চারিদিকেই।

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ ব্যাটিংয়ের কোন জায়গা নিয়ে কাজ করেছেন?

আফিফঃ পাওয়ার হিটিং নিয়ে বলতে গেলে যেমন আমরা পাওয়ার প্লে'র বাইরে ব্যাটিং করি তখন পাঁচজন ফিল্ডার বাইরে থাকেন, তখন পাওয়ার হিটিং না করতে পারলে তো রান আসবে না। এটা নিয়েই কাজ করেছি আর বিপিএলে সফল হয়েছি। জিনিসটা ভালো হচ্ছে এখন। 

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ টানা টপ অর্ডারে ব্যাটিং করার সুযোগ পেয়েছেন...

আফিফঃ এই জিনিসটা অবশ্যই সাহায্য করেছে, গতবার আমি টাইটান্সে খেলেছি সেখানেও তিন-চারে ব্যাটিং করেছি। ওই অনুযায়ী এখানে যখন এসেছি ওয়ার্নার ছিল, ওয়াকার স্যার ছিলেন, উনাদের ওই বিশ্বাসটা ছিল আমার উপর যে আমি টপ অর্ডারে পারব ব্যাটিং করে দলকে ভালো কিছু দিতে। তাঁরা এই বিশ্বাসটা রেখেছিলেন আর আমি বিশ্বাস করেছি, আমার উপর তাদের অনেক বিশ্বাস আছে। এই জিনিসটা অনেক সাহায্য করেছে। কেউ যদি বিশ্বাস না করে ওই কাজ করা অনেক কঠিন হয়ে যায় আসলে। 

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ ফাস্ট বোলারের বিপক্ষে সাহসী ব্যাটিং করেছেন এবারের বিপিএলে, যা খুবই লক্ষণীয় ছিল।

আফিফঃ আমি তো টপ অর্ডারে ব্যাটিং করি। আর এখানে খেলতে হলে পেসের বিপক্ষে অবশ্যই ভালো খেলতে হবে। 

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ টি-টুয়েন্টি ব্যাটিংয়ের কোন জায়গা নিয়ে কাজ করার দরকার আছে?

আফিফঃ হ্যাঁ উন্নতির তো অবশ্যই দরকার আছে, আমি যে ইনিংসগুলি খেলেছি ৩০-৪০ রানের, প্রত্যেক ম্যাচেই বলতে গেলে ২০-৪০'র মধ্যে রান করেছি। ওই ইনিংস গুলি যদি বড় করতে পারতাম তাহলে আরও রান হতো আমার। এগুলো নিয়েই কাজ করব, ভবিষ্যতে যেন ভালো কিছু করতে পারি। 

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ ফিল্ডিংয়ে অনেক উন্নতি এসেছে...

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ আমার ব্যাটিং-বোলিং খারাপ হলেও ফিল্ডিংয়ে প্রেশার থাকে না। ফিল্ডিং সব সময়ই ভালো করার চেষ্টা করি। এবছর আমার কাছে বেশী বল আসছে দেখে হয়তো এমন মনে হয়েছে। ফিল্ডিং সবসময়ই ভালো করার চেষ্টা করি। 

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ প্রতি ম্যাচেই গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ফিল্ডিং করেছেন...

আফিফঃ গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ফিল্ডিং আমি গেল বছর থেকেই করে আসছি, 'এ' টিম, এইচপি টিম যেখানেই খেলি সেখানেই গুরুত্বপূর্ণ পজিশনে ফিল্ডিং করে আসছি। বিপিএলেও সেটাই হয়েছে। আর এখানেও বিশ্বাস অনেক বড় একটা জিনিস, আপনাকে বিশ্বাস করছে যে আপনি ভালো ফিল্ডার, সেরা ফিল্ডার, এটা গুরুত্বপূর্ণ। 

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ ওয়ার্নারকে কাছ থেকে দেখে কি শিখেছেন?

আফিফঃ ওয়ার্নারের কাছ থেকে তরুণদের অনেক কিছুই শেখার আছে। ও যেভাবে খেলাটাকে নেয়, সেটা আলাদা। সে বলতো, মাঠে থেকে এসে যেন নিজেকে বলতে পারো যে শতভাগ দিয়ে এসেছি। পরবর্তীতে যেন আফসোস না কর, অনেক বেশী পেশাদারী সে। 

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ ওয়ার্নারের সাথে ব্যাটিং নিয়ে কথা হয়েছে আলাদা ভাবে?

আফিফঃ নেটে যখন একসাথে ব্যাট করেছি তখন কথা হয়েছিল। ও উপদেশ দিয়েছে কিছু যে তুমি এটা এভাবে না করে এভাবে করলে হয়তো ভালো হত। তোমার উপর নির্ভর করে বিষয়গুলো। এমন কিছু ছোটোখাটো টিপস দিয়েছে।

ক্রিকফেঞ্জিঃ বিশেষ কোনো টিপস দিয়েছে?

আফিফঃ আলাদা কিছু বলতে একটা কথাই আমার মাথায় ছিল যে তুমি তোমার সামর্থ্য, শক্তি অনুযায়ী খেলবে, তুমি তোমার সেরা খেলার চেষ্টা করবে। কখনও তুমি তোমার শক্তির বাইরে যাবে না। তোমার যেভাবে খেলতে মন চায় তুমি সেভাবেই খেলবে। কারো কথা শুনতে হবেনা তোমার। এই ব্যাপারগুলোই বলেছিল।