বাংলাদেশ-উইন্ডিজ সিরিজ

হোপের বড় স্বপ্ন

তামজিদুর রহমান

তামজিদুর রহমান
প্রকাশের তারিখ: 11:44 রবিবার, 23 ডিসেম্বর, 2018

|| ক্রিকফ্রেঞ্জি করেসপন্ডেন্ট ||

বাংলাদেশের বিপক্ষে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের চার ইনিংসে সবমিলিয়ে মাত্র ৩৯ রান করেছিলেন উইন্ডিজ উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান শাই হোপ। কিন্তু ওয়ানডে এবং টি-টুয়েন্টিতে একেবারেই নতুন রূপে আবির্ভূত হতে দেখা গিয়েছে তাঁকে।

তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে দুটি শতক সহ ২৯৭ রান নিয়ে শীর্ষ রান সংগ্রাহক হয়েছিলেন তিনি। এরপর প্রথম টি টুয়েন্টিতে ব্যাট হাতে করেন ৫৫ রান। সম্প্রতি সীমিত ওভারের ক্রিকেটে নিজের ব্যাটিং, ভবিষ্যতের লক্ষ্য এবং বিশ্বকাপ প্রসঙ্গে ক্রিকফ্রেঞ্জির সাথে কথা বলেছেন হোপ। 

পাঠকদের জন্য সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরা হলো...

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ টেস্টে খুব বেশি ভালো সময় কাটেনি আপনার। এরপর ওয়ানডেতে দারুণভাবে ফিরে এসেছেন। আপনার ব্যাটিংয়ে কি পরিবর্তন এনেছেন? 

হোপঃ  সত্যি কথা বলতে আমি মনে করি না আমি রাতারাতি কোনও পরিবর্তন নিয়ে এসেছি আমার খেলায়। আমার ধারণা সাদা বলের ক্রিকেটে বিশ্বাস ধরে রাখা, ফর্মুলা মেনে চলা এবং আক্রমণাত্মক মনোভাব নিয়ে খেলাটাই মূল বিষয়। আমি মনে করি না যে টেস্ট, ওয়ানডে এবং টি-টুয়েন্টিতে খুব বেশি পরিবর্তন এসেছে। কখনও কখনও আপনি আপনার প্রত্যাশা অনুযায়ী রান করতে পারবেন না। তবে এই ফরম্যাটে রান করতে পারাটা আনন্দের।

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ আপনি সাকিব আল হাসানের বলে অনেক বার আউট হয়েছেন, এখানে কি মানসিক কোনও ব্যাপার আছে? 

হোপঃ সে একজন ভালো বোলার। সে সর্বদাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ভালো বোলিং করে। সুতরাং তাঁকে বোলার হিসেবে সম্মান দিতেই হবে। মাঝে মধ্যে আমি তাঁর বিপক্ষে রান করেছি, এটা এমনই। 

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ বাংলাদেশ যখন জুলাইয়ে উইন্ডিজ সফর করেছিলো তখন আপনি তেমন রান করতে পারেননি। কোনো প্রেরণা পেয়েছেন এখানে (বাংলাদেশে) নিজেকে প্রমাণ করার ক্ষেত্রে?

হোপঃ একজন ব্যাটসম্যান হিসেবে আপনি চাইবেন যতটা সম্ভব রান করতে, আপনার দলের জন্য। সেটি শুধুমাত্র একটি বিশেষ কোনও সফরে নয়। প্রতিটি মুহূর্তে যখনই আপনি ক্রিজে নামবেন তখনই আপনি চাইবেন দলের জন্য বড় রান করতে।

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ  নিক (পোথাস) আপনার প্রস্তুতি নিয়ে কথা বলেছিলেন....

হোপঃ ম্যাচ থেকে আমি যা প্রত্যাশা করি সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি নিচ্ছি এবং সেটি যে কন্ডিশনেই হোক। নেটে আমি যতটা কাজ করব, মাঠের খেলায় আমার আত্মবিশ্বাস ততোই বৃদ্ধি পাবে এবং আমার যা করনীয় সেটাও বাস্তবায়ন করতে পারব। আপনি কোন কন্ডিশনে খেলছেন এবং কোন জায়গায় আছেন তার ওপর ভিত্তি করে এই বিষয়টি পরিবর্তন হবে। আমরা আশা করেছি যে বাংলাদেশে বল প্রচুর ঘুরবে। সুতরাং একজন ব্যাটসম্যান হিসেবে অফ এবং লেগ উভয় স্পিনের বিপক্ষে প্রস্তুতি নেয়াটা জরুরী বলে আমি মনে করি।

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ আপনি বর্তমানে ওপেনিংয়ে ব্যাটিং করছেন। আপনি কি মনে করেন এটাই আপনার ব্যাটিং করার আদর্শ পজিশন?  

হোপঃ আমার দল যেখানে চাইবে সেখানেই আমি ব্যাট করব। আমি শুধুমাত্র আমার সেরাটা দেয়ার চেষ্টা করব এবং আমার কাজটি করে যাব দলের জন্য।

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ ওয়ানডে এবং টি টুয়েন্টিতে কি ধরণের মানসিক পরিবর্তন আনতে হয়? 

হোপঃ টি-টুয়েন্টি ফরম্যাটের সবকিছুই অনেক দ্রুততম। এখানে মূল বিষয় হলো খেলাটির ধরণের সাথে নিজেকে মানিয়ে নেয়া। আমি বলব না যে আমার খেলা অনেক বেশি পরিবর্তন হয়েছে। এটি পরিস্থিতি, বোলার এবং দল যা চায় তার সাথে মানিয়ে নেয়ার বিষয়।     

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ আপনার কাছে কি মনে হয়, উইন্ডিজ ক্রিকেট মানেই এমন আক্রমণাত্মক খেলা? 

হোপঃ সত্যি কথা বলতে এটি আসলে আমাদের নিজস্ব স্টাইল। আমরা বল মেরে খেলার জন্য এবং আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলার জন্য পরিচিত। সুতরাং, পাওয়ারপ্লেতে ছেলেদের ৯০ রান নেয়ার ব্যাপারটি দারুণ। এটি আমাদের জন্য একটি ভালো প্ল্যাটফর্ম যেখানে আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে পারি...এমনকি ওয়ানডে ফরম্যাটেও এটি প্রযোজ্য, শুধু টি-টুয়েন্টিতে নয়।

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ বিশ্বকাপের আগে আপনার লক্ষ্য কি? বিশ্বকাপে যাওয়ার আগে আপনার অবশ্যই অনেক আত্মবিশ্বাস থাকবে বলে মনে হয়... 

হোপঃ হ্যাঁ, অবশ্যই। আমি একজন ব্যাটসম্যান এবং আমি রান পাচ্ছি...আমি এই কারণে সন্তুষ্ট হতেই পারি। তবে আমি ব্যক্তিগত কোনও লক্ষ্য পূরণ করাকে সাফল্য বলে মানতে পারছি না যতক্ষণ না আমরা বিশ্বকাপ জিততে পারি অথবা সেমিফাইনালে যেতে পারি এবং এরপর ফাইনালে। আপনি যদি জিততে না পারেন তাহলে কোনও কিছুরই মানে নেই আসলে।

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ আপনার কি মনে হয় আপনার সামর্থ্য আছে বিশ্বকাপ জেতানোর? 

হোপঃ এটি আসলে নির্ভর করে প্রতিটি ম্যাচ কাদের বিপক্ষে খেলছি, আমি সর্বদা বিশ্বাস করি যে আমরা জিততে পারি।