লীগ আয়োজন

জেলা ভিত্তিক লীগ আয়োজনে টনক নড়ছে বিসিবির?

তামজিদুর রহমান

তামজিদুর রহমান
প্রকাশের তারিখ: 17:17 শনিবার, 28 জুলাই, 2018

বাংলাদেশ বিভিন্ন জেলার আনাচে কানাচে ছড়িয়ে আছে অনেক প্রতিভাবান ক্রিকেটার। কিন্তু এ সকল ক্রিকেটারের বেশিরভাগই রয়ে যায় লোকচক্ষুর আড়ালেই।

এই কারণে দেশের ক্রিকেটের পাইপলাইনও সমৃদ্ধ হচ্ছে না খুব একটা। মূলত জেলা ভিত্তিক লীগের তেমন প্রচলন না থাকায় প্রতি বছর প্রতিভাবান ক্রিকেটার হারাচ্ছে বাংলাদেশ। আর এর পেছনে অনেকাংশে দায়ভার বিসিবিরই। টুর্নামেন্ট আয়োজনে তাদের গড়িমসির কারণেই সেভাবে জেলাভিত্তিক লীগের প্রচলন হয়ে ওঠেনি।

অনেক ক্রিকেট বোদ্ধাদের মতে বোর্ড চাইলে একটি সুষ্ঠু উপায়ে প্রতিটি জেলাতেই নির্দিষ্ট সময়ে ক্রিকেট লীগের ব্যবস্থা করতে পারে। তবে বিসিবি কর্মকর্তা সুজন বলেছেন ভিন্ন কথা। তিনি জানিয়েছেন লীগ আয়োজনের বিষয়টি বিসিবির অধীনে হয় না, বরং এর এখতিয়ার নাকি জেলা ক্রীড়া সংস্থার। এই প্রসঙ্গে দেশের বিভিন্ন জেলার কোচদের নিয়ে শনিবার মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে আয়োজিত এক সভায় সুজন বলেন, 

'আসলে আমরা কাজ করি ১৪, ১৬, ১৮ বছরের ক্রিকেটারদের নিয়ে। সেখানে দেখা যায় যে যখন কোন ক্যাম্প ডাকে তখন সেখান থেকে বাছাই করে, ভালো ক্রিকেটার তৈরি করার চেষ্টা করা হয়। প্রতি বছর আমাদের এই ভ্যারিফিকেশন হয়। নতুন ক্রিকেটাররা আসছে, তবে লীগটি না হওয়াটা আমাদের ডেভেলপমেন্টের অধীনে নয় সত্যি কথা বলতে গেলে। এটি জেলা ক্রীড়া সংস্থার অধীনে এবং এটি খুবই দুঃখজনক যে যখন আমরা খেলোয়াড় ছিলাম, কিংবা ছোট ছিলাম আমরা কিন্তু ঢাকার বাইরে প্রচুর ম্যাচ খেলেছি এবং তখনই আমাদের জেলায় যেসকল ক্রিকেটার ছিলো তাদের সাথে পরিচয় বা বন্ধুত্ব হয়। তবে এখন কিন্তু এই ব্যাপারটি অনেক কম।'

তবে দেরিতে হলেও এবার টনক নড়েছে বিসিবির। জেলাভিত্তিক লীগ আয়োজনের ব্যাপারে এবার জোর দিতে যাচ্ছে বোর্ড বলে জানিয়েছেন সুজন নিজেই। দেশের অনেক জেলাতেই লীগ না হওয়ার কারছে এবং অনেক জায়গায় রেলিগেশন সিস্টেম না থাকায় ক্রিকেটাররা পর্যাপ্ত অর্থ পাচ্ছে না বলে মনে করেন বিসিবির এই কর্মকর্তা। পাশাপাশি খেলার মানও খুব একটা থাকছে না এসব লীগে বিধায় এটি দেশের ক্রিকেটের জন্য অনেক বড় সমস্যা বলে মনে করছেন তিনি। সুজনের ভাষায়,

'অনেক জেলাতেই এখন লীগ হচ্ছে না এবং অনেক জেলাতে যেখানে হয় সেখানে আবার রেলিগেশন সিস্টেম নেই। মানে ক্রিকেটাররা পয়সাও পাচ্ছে না আবার লীগ খেলে যে অল্প টাকা পাওয়ার কথা সেটি থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে। ভালো খেলাও হচ্ছে না আসলে সত্যি কথা বলতে গেলে। এটি আমাদের ক্রিকেটের জন্য একটি চিন্তার বিষয়।'

সুজন আরও যোগ করেন, 'ক্রিকেটাররা উৎসাহ না পাওয়ারই কথা। কারণ ক্রিকেটাররা অপেক্ষায় থাকে কখন ডেভেলপমেন্টের খেলা শুরু হবে, সেই খেলাগুলো তারা খেলতে পারবে, সেখান থেকে সিলেক্টেড হয়ে পরে জাতীয় বয়সভিত্তিক দলগুলোতে সুযোগ পাবে সেটাই আসলে প্রক্রিয়া।'

এক্ষেত্রে বোর্ড থেকে লীগ আয়োজন করার ব্যাপারে উৎসাহ দেয়া উচিৎ বলে মনে করেন সুজন। সেক্ষেত্রে তরুণ ক্রিকেটাররা ম্যাচ খেলার সুযোগ বেশি পাবে এবং তাদের ক্রিকেটীয় জ্ঞান যথেষ্ট বৃদ্ধি পাবে। সুজনের বক্তব্য, 

'বোর্ড থেকে আমার মনে হয় তাদের উৎসাহ দেয়া উচিৎ অন্তত লীগগুলো আয়োজন করানোর জন্য যেন তরুণ ছেলেগুলো ম্যাচ খেলতে পারবে বেশি। আর যতোই ম্যাচ খেলবে ততো গেম সেন্স আরো বাড়বে এবং এটি ক্রিকেটকে দারুণভাবে সাহায্য করবে।'